শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য
*********************************************
শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা বৌদ্ধদের কাছে অতি তাৎপর্যময় পুণ্যতিথি।এ পুর্ণিমা তিথিতে তথাগত বুদ্ধের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী ব্যাপক তাৎপর্য বহন করে। তথাগত বুদ্ধের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে থাকে। তাই বৌদ্ধদের কাছে পূর্ণিমা আসে জীবনে পূর্ণতা সাধনের জন্য। তথাগত বুদ্ধ যেমন নিজ প্রচেষ্টায় জীবনে পূর্ণতা সাধন করে মহাবোধি বা আলোকপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ,জগৎজ্যোতি বুদ্ধত্ব প্রাপ্ত হন ,ঠিক তেমনি ভাবে পূর্ণ চন্দ্রের মতো নিজের জীবনকে ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ লাভ করাই প্রতিটি বৌদ্ধদের আত্ম প্রচেষ্টা। আষাঢ়ী পূর্ণিমা হচ্ছে বৌদ্ধদের জীবনে বিচিত্র রূপ পরিগ্রহ করে তাদের কাছে অতি স্মরণীয় হয়ে আছে।
আজ হতে আড়াই হাজার বৎসর আগের ঘটনা। কপিলাবস্তু নগরে আষাঢ়ী পূর্ণিমা সাড়ম্বরে উদ্যাপিত হতো।রাজন্ত পুরেও পালিত হতো এ পুণ্যোৎসব। রাজা শুদ্ধোধনের মহিষী রাণী মহামায়া আষাঢ়ী পূর্ণিমার উপোসথ ব্রত অধিষ্ঠান করলেন।সে রাত্রে রাণী মহামায়া স্বপ্ন মগ্ন হয়ে দেখলেন চারদিক পাল দেবগণ এসে পালঙ্কসহ মায়াদেবীকে নিয়ে গেলেন হিমালয়ের পর্বতোপরি সুবিস্তৃত এক সমতল ভূমির ওপর। তখন তারা মহামায়াকে সুউচ্চ মহাশাল বৃক্ষতলে রেখে সশ্রদ্ধ ভঙ্গিমায় এক প্রান্তে দাঁড়ালেন। তারপর মায়াদেবীকে তাদের মহিষীগণ এসে হিমালয়ের অনবতপ্ত হৃদে (মানস-সরোবর ) স্নান করিয়ে দিব্য (স্বর্গীয়) বসন ভূষণ ও মাল্যগন্ধে সমলকৃত করলেন। অনতিদূরে শোভা পাচ্ছিল এক রজতপর্বত। সেই পবর্তোপরি ছিল এক সুবর্ণ প্রাসাদ।চারদিক পাল দেবগণ মহারাজা পুনঃ পালঙ্কসহ দেবীকে সেই প্রাসাদে নিয়ে গিয়ে দিব্যশর্য্যায় শয়ন করালেন। তখন অদুরবর্তী সুর্বণ পর্বত থেকে নেমে এসে উত্তর দিক থেকে অগ্রসর হয়ে রজতপর্বতে আরোহণ করলো। রজত শুভ্রশুন্ড একটি শ্বেতপদ্ম ধারণ করে অবলীলাক্রমে কবীবর মহাক্রোষ্ণনাদে সুবর্ণ প্রাসাদে প্রবেশ করলেন। তৎপর ধীরে ধীরে তিন বার মাতৃশয্যা প্রদক্ষিণ করে তার দক্ষিণ পাশ্বভেদ করে মাতৃজঠরে প্রবেশ করলো। কিন্তু তা স্বপ্ন নয়। অলৌকিক বাস্তব ঘটনা, যা ঘটে গেল স্বপ্নাকারে। তখন চারদিকে দিব্য আভায় উদ্ভাসিত হলো। এ রূপে উত্তরাষাঢ়ী নক্ষত্র যোগে মাতৃকুক্ষিতে প্রতিসিন্ধ গ্রহণ করলেন ভাবী বুদ্ধ বোধিসত্ত্ব। সেই আষাঢ়ী পূর্ণিমার পুণ্য তিথিতেই এ অলৌকিক স্বপ্ন দর্শনে ভীত হলেন না রাণী মায়াদেবী । যেন দিব্য এক পুলকে অভিভূত তিনি । পরদিন প্রত্যুষে দেবী রাজাকে স্বপ্ন বৃত্তান্ত জানালেন,রাজা কালবিলম্ব না করে চৌষট্টি জন জ্যোতিবিদ এনে স্বপ্নের ফল জানতে চানলেন। বিপ্রগণ বললেন , মহারাজ চিন্তা করবেন না , আপনার মহিষী সন্তান সম্ভবা হয়েছেন। লাভ করবেন তিনি এক দেব দুর্লভ পুত্ররত্ন। তখন বসুন্ধরা হবে ধন্য। সিদ্ধার্থ গৌতমের বয়স তখন ২৯ (ঊনত্রিশ) ,তখন তার যৌবন পরিপূর্ণ। ভরা যৌবনের মাদকতা তাঁর কাছে নেই। সর্বদা বৈরাগ্য চিন্তায় মনকে উদাসীন করে তোলে। এ অবস্থা দেখে রাজা শুদ্ধোধন কুমার সিদ্ধার্থ গৌতমকে সুন্দরী যশোধরার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। ফিরে এলো সেই আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতেই সিদ্ধার্থ পিতা-মাতা, স্ত্রী-পুত্র,ভোগ বিলাস,রাজ্য,ধন,সব কিছুকে তুচ্ছ মনে করে মহাভিনিক্রমণ অর্থাৎ সংসার ত্যাগ করলেন। সমস্ত তৃষ্ণার বন্ধনকে ছিন্ন করে জগতের মুক্তির জন্য এ তাঁর আত্মত্যাগ।
জগতের ইতিহাসে এরূপ আর কোন মহাপুরুষের জীবনে দৃষ্ঠান্ত নেই। ভোগের পৃথিবীতে এরূপ ত্যাগের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন তা জীব-জগতের দুঃখ মোচনের জন্য। অতঃপর রাজকুমার গয়ার বোধিদ্রুম মূলে ০৬ (ছয়) বছর কঠোর সাধনার পর চরম ও পরম জ্ঞান ‘মহাবোধি’ লাভ করলেন। সম্যক সম্বুদ্ধ হিসাবে দেবমানবকে প্রজ্ঞার আলো বিতরণের তাঁর আর্বিভাব। বুদ্ধত্ব লাভের পর তথাগত (সম্যক সম্বুদ্ধ) চিন্তা করতে লাগলেন তাঁর নবলব্ধ ধর্ম সর্বপ্রথম কার কাছে প্রকাশ করবেন। সিদ্ধার্থ গৌতম গৃহ-ত্যাগের পর প্রথম সাক্ষাৎ পান ঋষি আড়ার কালামের । সেই ঋষি আড়ার কালামের কথা চিন্তা করতেই দিব্যজ্ঞানে দেখেন তিনি পরলোকগমণ করেছেন। দ্বিতীয় সাক্ষাৎপ্রার্থী রামপুত্র রুদ্রকের কথা স্মরণ করে জানতে পারেন তিনি পরপারের যাত্রী হয়েছেন। কাকে তাঁর প্রথম নবলব্ধ ধর্ম প্রকাশ করবেন সেই চিন্তা করতে গিয়ে পঞ্চবর্গীয় শিষ্যের কথা মনে পড়লো। তখন তিনি সারানাথের ঈষিপত্তন মৃগদাবে গমণ করলেন। এই পঞ্চবর্গীয় শিষ্যের তাঁর ধ্যানের সঙ্গী ছিলেন। সিদ্ধার্থ কৃচ্ছ্রসাধনা ত্যাগ করে মধ্যমপথ গ্রহণ করলে তারা তাকে ত্যাগ করে চলে যান।
তথাগত বুদ্ধ সেই আষাঢ়ী পূর্ণিমার দিনে ঈষি-পত্তন মৃগদাবে সে পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদেরকে সর্ব প্রথম ধর্ম দেশনা ’ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র’ দেশনা করলেন। তাঁর নবলব্ধ সদ্ধর্মকে প্রকাশ করলেন । তিনি ’ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্রে’ দেশনায় বললেন – ‘হে ভিক্ষুগণ ! দুইটির চরমে প্রব্রজিত ভিক্ষু শ্রামণদের যাওয়া উচিত নহে। সেই দুইটি কী কী ? প্রথমত হীন গ্রাম্য ও সাধারণ জনসেবিত অনার্য ও অনর্থকর কাম্যবস্তুতে অনুরক্ত হওয়া আর দ্বিতীয়ত্ব অনার্য ও অনর্থযুক্ত আত্মক্লেশজনিত দুঃখবরণ। এই দুই অন্ত ত্যাগ করে তথাগত মধ্যমপথ অধিগত হয়েছে, যা চক্ষু উৎপাদনকারী এবং যা মানুষকে সম্বোধি বা র্নিবাণের দিকে সংবর্তিত করে।’ভগবান বুদ্ধের এ মধ্যমপথের শিক্ষা হলো – আর্যসত্য সমূহের দর্শন লাভ ।সংসার দু:খকে অতিক্রম হেতু যে মার্গ দর্শন । মার্গজ্ঞান ক্ষণেই চার আর্যসত্য প্রত্যক্ষ করেন।তা সংসার দু:খ বিনাসের হেতু । সংযুক্ত নিকায়ের সচ্চ সংযুক্ত তৃতীয় বর্গে বলা হয়েছে – ’যারা দু:খ, দু:খোৎপত্তি, দু:খ নিরোধ এবং দু:খ নিরোধের মার্গ চিত্তবিমুক্তি ও প্রজ্ঞাবিমুক্তি জানেন না , তারা জন্ম, জরাদির অধীন এবং তারা দুখের অন্তসাধন করতে সক্ষম । যারা উক্ত আর্যসত্য জানেন, জন্ম, জরাদির অধীন না হয়ে সর্ব দু:খের অন্তসাধন করতে সক্ষম ।’
ভগবান বুদ্ধ ভিক্ষুদের উদ্দেশ্যে বলেছেন: ’ ভিক্ষুগণ !চারি আর্য সত্যের অনুরোধ ও পটিবোধের অভাবে আমাকেও তোমাদিগকে দীর্ঘকাল জন্ম হতে জন্মান্তরে এবং ভব হতে ভবান্তরে সন্ধাবন ও সংসরণ করতে হয়েছে । ভিক্ষুগণ! সে চার আর্যসত্য বর্তমানে অনুবুদ্ধ ও পটিবিদ্ধ হয়েছে । এখন ভবতৃঞ্চা উচ্ছিন্ন হয়েছে, ভবরজ্জু খীণ হয়েছে । আর পুর্নজন্ম নেই ।’
সিদ্ধার্থ গৌতমের বুদ্ধত্ব প্রাপ্তির সপ্তম বছর পর আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিবসে শ্রাবস্তীর নগরদ্বারে গন্ডম্ব বৃক্ষমূলে যমক প্রতিহার্য ঋদ্ধি প্রদর্শন করে । অতঃপর ঋদ্ধি প্রদর্শন করে ক্রমে ত্রিপদ বিক্ষেপে তাবতিংশ দেবলোকে উপস্থিত হয়েছিলেন। তথায় তিনি অভিধর্ম দেশনা করার মানসে পারিজাত বৃক্ষমূলে পান্ডুকম্বল শিলাসনে উপবেশন করলেন। দশ সহস্র চক্রবালের দেব-ব্রক্ষ্ম তখন বুদ্ধ সন্নিধানে সম্মিলিত হলেন। বুদ্ধের অনুপম ষড়শ্মি দেবব্রক্ষ্মের দিব্য জ্যোতিকেও অভিহিত করল। শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা পুণ্য তিথিতেই তথাগত বুদ্ধ তাবতিংশ স্বর্গে বর্ষাবাস গ্রহণ করেছিলেন। এ বর্ষাবাসের কারণ তাঁর মাতৃদেবীকে র্নিবাণ লাভের হেতু উৎপন্ন করা।
তাই এ আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি বুদ্ধের জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এ পূর্ণিমার মাহাত্ম্য বর্ণনা ব্যাপক। অনেক পুণ্যময় ও তাৎপর্যময় স্মৃতি বিজরিত এই আষাঢ়ী পুর্ণিমা। বাংলাদেশেরও অনুরূপভাবে এ আষাঢ়ী পূর্র্ণিমা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর পরিবেশে প্রতিপালিত হয়ে এসেছে। বিশ্ব মানবতা সভ্যতার অনন্য পুণ্যময় তিথিকে স্মরণ করে আত্মসংযম করে সবাই র্নিবাণ লাভের হেতু উৎপন্ন করুক-এই প্রত্যাশা।
লেখক ------------------
শ্রী: প্রজ্ঞাসেন ভিক্ষু
prajna sen Bhikkhu.
আবাসিক : রামু প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু-শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেন
বর্তমান আবাসিক: wat Wang tawntok thailand.
Tuesday, 16 July 2019
Wednesday, 3 July 2019
নারী কত প্রকার কি কি সবাই কে পড়ার জন্য আহবান রইল
#পঞ্চ_কল্যাণবতী_নারী_কি_কি?
১। #কেশ_কল্যাণবতীঃ- যে নারী ময়ুর পুচ্ছ সদৃশ মস্তকের ভ্রমর কৃষ্ণ কেশ কল্যাণ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত নামিয়া অগ্রভাগ উর্ধ্বমুখী হইয়া বিরাজ করে তাহাকে কেশ কল্যাণবতী বলা হয়।
২। #মাংস_কল্যাণবতীঃ- যে নারী দন্তবরণ অধরোষ্ঠ পক্ক বিম্বফলের বর্ণের মত সুখ ও স্পর্শ হয় ইহাকে বলা হয় মাংস কল্যাণবতী।
৩। #অস্হি_কল্যাণবতীঃ- যে নারী দন্তরাশি শ্বেতবর্ণ সমান ঘন ছিদ্রহীন ও সুদক্ষ শিল্পীর সুকৌশলে রচিত বৈদুর্য্য পংক্তির মতো শোভা প্রাপ্ত হয়,তাহাকেই বলা হয় অস্থি কল্যাণবতী।
৪। #ছবি_কল্যাণবতীঃ- যে নারী দেহ চর্ম স্নিগ্ধ মসৃন অপরূপ রূপশ্রী মণ্ডিত দর্শনীয়া।কর্ণিকার পুষ্পের মত শ্বেতবর্ণ তাহাকে বলা হয় ছবি কল্যাণবতী।
৫। #বয়স_কল্যাণবতীঃ- দশটি অথবা বিশটি সন্তানের জননী হইলেও যে নারী ষোড়শী যুবতীর ন্যায় স্হির যৌবনা থাকিবে তাহাকে বলা হয় কল্যাণবতী।
১। #কেশ_কল্যাণবতীঃ- যে নারী ময়ুর পুচ্ছ সদৃশ মস্তকের ভ্রমর কৃষ্ণ কেশ কল্যাণ পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত নামিয়া অগ্রভাগ উর্ধ্বমুখী হইয়া বিরাজ করে তাহাকে কেশ কল্যাণবতী বলা হয়।
২। #মাংস_কল্যাণবতীঃ- যে নারী দন্তবরণ অধরোষ্ঠ পক্ক বিম্বফলের বর্ণের মত সুখ ও স্পর্শ হয় ইহাকে বলা হয় মাংস কল্যাণবতী।
৩। #অস্হি_কল্যাণবতীঃ- যে নারী দন্তরাশি শ্বেতবর্ণ সমান ঘন ছিদ্রহীন ও সুদক্ষ শিল্পীর সুকৌশলে রচিত বৈদুর্য্য পংক্তির মতো শোভা প্রাপ্ত হয়,তাহাকেই বলা হয় অস্থি কল্যাণবতী।
৪। #ছবি_কল্যাণবতীঃ- যে নারী দেহ চর্ম স্নিগ্ধ মসৃন অপরূপ রূপশ্রী মণ্ডিত দর্শনীয়া।কর্ণিকার পুষ্পের মত শ্বেতবর্ণ তাহাকে বলা হয় ছবি কল্যাণবতী।
৫। #বয়স_কল্যাণবতীঃ- দশটি অথবা বিশটি সন্তানের জননী হইলেও যে নারী ষোড়শী যুবতীর ন্যায় স্হির যৌবনা থাকিবে তাহাকে বলা হয় কল্যাণবতী।
Friday, 28 June 2019
বুদ্ধ নিজেও রোগির সেবা করছেন,আমি এবং আপনারাও মাতা ও পিতার ঔষুধ দিয়ে সেবা করবেন ও কোনো রোগি মানুষ দেখলে আপনার সমম্ত অনুযায়ী ঔষুধ দান করবেন, আরো ভালো কিছু উপদেশ বাণী পাওয়ার জন্য এই ওয়েবসাইটি ভিজিট করতে ভুলবেন না
ভগবান বুদ্ধ ও এক রোগী ভিক্ষু
...............................................................
নৈতিক ও মানবিক গুণাবলিতে ভরপুর। ভগবান বুদ্ধ জন্ম-জন্মান্তরে দশ পারমীর চর্চা করে নৈতিক চরিত্রের উৎকর্ষতা সাধনপূর্বক বুদ্ধত্ব লাভ করেছেন। বুদ্ধ শুধু নিজেই নৈতিক জীবনযাপন করেননি, তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্য এবং অনুসারীদেরও নৈতিক জীবনযাপনের শিক্ষা দিয়েছেন। নৈতিকতা ছিল মহামতি বুদ্ধের প্রচারিত ধর্মবাণীর মূল ভিত্তি। নিচে গৌতম বুদ্ধের জীবনে নৈতিকতা প্রদর্শনের নিদর্শন এবং নৈতিক উপদেশ সম্পর্কে এক ঘটনার সর্ম্পকে জানব।
বুদ্ধত্ব লাভের পর গৌতম বুদ্ধ পঁয়তাল্লিশ বছর সকল প্রাণির দুঃখমুক্তির জন্য ধর্ম প্রচার করেন। এসময় তিনি ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সকল প্রাণির সেবা ও কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্য এবং অনুসারীদের নৈতিক ও মানবিক কর্ম সম্পাদনের উপদেশ দিতেন। এখানে আমরা বুদ্ধের জীবনে নৈতিকতা প্রদর্শনের একটি কাহিনী পাঠ করব।
একটি ছোট বিহারে কয়েকজন ভিক্ষু থাকতেন। সেই বিহারে তিষ্য নামে একজন ভিক্ষু ছিলেন, যাঁর সাথে কারও সদ্ভাব ছিল না। সবাই তাঁকে এড়িয়ে চলতেন। একবার তিনি ভীষণ চর্মরোগে আক্রান্ত হন। তাঁর গায়ের ক্ষত থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে লাগল। এরকম তিনি যন্ত্রণাকাতর অবস্থায়ও তাঁর সেবায় কেউ এগিয়ে এলো না। হঠাৎ বুদ্ধ এ বিহারে আগমন করলে সেবা-শুশ্রুষাবিহীন মারাত্মক রোগাক্রান্ত এ ভিক্ষুকে দেখেন। বুদ্ধ নিজেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সেবায় লেগে যান।
তিনি সেবক আনন্দকে নিয়ে নিজ হাতে রোগীর ক্ষতস্থান পরিষ্কার করেন। তাঁকে স্নান করান। তারপর গা মুছিয়ে পরিষ্কার বিছানায় শুইয়ে দেন। বুদ্ধ বিহারের ভিক্ষুদের ডেকে রোগাক্রান্ত ভিক্ষুকে সেবা না করার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। বুদ্ধ তাঁদের কাছ থেকে সমস্ত ব্যাপার শুনে খুব অসন্তুষ্ট হন। তিনি তাঁদের আচরণকে অনৈতিক ও অমানবিক বলে তিরষ্কার করেন এবং হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করার উপদেশ দেন। হে ভিক্ষুগণ, তোমাদের কারো মা –বাবা কেও নেই দেখার জন্যা সেবা করার জন্যা, তোমরা নিজেরা যদি নিজেদের খেয়াল না রাখো তাহলে কে রাখবে?
অতঃপর তিনি তাঁদের বললেন, ‘দরিদ্রের সহায় হওয়া, অরক্ষিতকে রক্ষা করা, রোগীর সেবা করা, মোহাচ্ছন্নকে মোহমুক্ত করা সকলের নৈতিক কর্তব্য।’ তিনি আরও বললেন, ‘এ জগতে মাতা-পিতা, শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, আর্তপীড়িত এবং গুরুজনের সেবায় সুখ লাভ করা যায়।’
উপদেশ দানের পর বুদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য নিয়ম প্রবর্তন করলেন: অসুখের সময় শিষ্য গুরুর, গুরু শিষ্যের, সতীর্থ সতীর্থের সেবা করবে
...............................................................
নৈতিক ও মানবিক গুণাবলিতে ভরপুর। ভগবান বুদ্ধ জন্ম-জন্মান্তরে দশ পারমীর চর্চা করে নৈতিক চরিত্রের উৎকর্ষতা সাধনপূর্বক বুদ্ধত্ব লাভ করেছেন। বুদ্ধ শুধু নিজেই নৈতিক জীবনযাপন করেননি, তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্য এবং অনুসারীদেরও নৈতিক জীবনযাপনের শিক্ষা দিয়েছেন। নৈতিকতা ছিল মহামতি বুদ্ধের প্রচারিত ধর্মবাণীর মূল ভিত্তি। নিচে গৌতম বুদ্ধের জীবনে নৈতিকতা প্রদর্শনের নিদর্শন এবং নৈতিক উপদেশ সম্পর্কে এক ঘটনার সর্ম্পকে জানব।
বুদ্ধত্ব লাভের পর গৌতম বুদ্ধ পঁয়তাল্লিশ বছর সকল প্রাণির দুঃখমুক্তির জন্য ধর্ম প্রচার করেন। এসময় তিনি ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সকল প্রাণির সেবা ও কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্য এবং অনুসারীদের নৈতিক ও মানবিক কর্ম সম্পাদনের উপদেশ দিতেন। এখানে আমরা বুদ্ধের জীবনে নৈতিকতা প্রদর্শনের একটি কাহিনী পাঠ করব।
একটি ছোট বিহারে কয়েকজন ভিক্ষু থাকতেন। সেই বিহারে তিষ্য নামে একজন ভিক্ষু ছিলেন, যাঁর সাথে কারও সদ্ভাব ছিল না। সবাই তাঁকে এড়িয়ে চলতেন। একবার তিনি ভীষণ চর্মরোগে আক্রান্ত হন। তাঁর গায়ের ক্ষত থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে লাগল। এরকম তিনি যন্ত্রণাকাতর অবস্থায়ও তাঁর সেবায় কেউ এগিয়ে এলো না। হঠাৎ বুদ্ধ এ বিহারে আগমন করলে সেবা-শুশ্রুষাবিহীন মারাত্মক রোগাক্রান্ত এ ভিক্ষুকে দেখেন। বুদ্ধ নিজেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সেবায় লেগে যান।
তিনি সেবক আনন্দকে নিয়ে নিজ হাতে রোগীর ক্ষতস্থান পরিষ্কার করেন। তাঁকে স্নান করান। তারপর গা মুছিয়ে পরিষ্কার বিছানায় শুইয়ে দেন। বুদ্ধ বিহারের ভিক্ষুদের ডেকে রোগাক্রান্ত ভিক্ষুকে সেবা না করার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। বুদ্ধ তাঁদের কাছ থেকে সমস্ত ব্যাপার শুনে খুব অসন্তুষ্ট হন। তিনি তাঁদের আচরণকে অনৈতিক ও অমানবিক বলে তিরষ্কার করেন এবং হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করার উপদেশ দেন। হে ভিক্ষুগণ, তোমাদের কারো মা –বাবা কেও নেই দেখার জন্যা সেবা করার জন্যা, তোমরা নিজেরা যদি নিজেদের খেয়াল না রাখো তাহলে কে রাখবে?
অতঃপর তিনি তাঁদের বললেন, ‘দরিদ্রের সহায় হওয়া, অরক্ষিতকে রক্ষা করা, রোগীর সেবা করা, মোহাচ্ছন্নকে মোহমুক্ত করা সকলের নৈতিক কর্তব্য।’ তিনি আরও বললেন, ‘এ জগতে মাতা-পিতা, শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, আর্তপীড়িত এবং গুরুজনের সেবায় সুখ লাভ করা যায়।’
উপদেশ দানের পর বুদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য নিয়ম প্রবর্তন করলেন: অসুখের সময় শিষ্য গুরুর, গুরু শিষ্যের, সতীর্থ সতীর্থের সেবা করবে
লাভী শ্রেষ্ঠ সীবলীর স্থবিরের কিছু গুণের কথা এই পোষ্টে দেয়া হয়েছে,এই ওয়েবসাইটি ভিজিট করতে ভুলবেন না
লাভী শ্রেষ্ট সীবলী পূজার উপকারিতা ও উপকরন।
লাভী শ্রেষ্ট সীবলী মহাস্থবির এর পূজা হয়ত সকলে কম বেশি আমরা বিহারে কিংবা বাড়িতে সুন্দর ও সুচারুভাবে করে থাকি। সীবলী পূজা করলে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতি হয়, খাদ্য বস্ত্র অভাব দূর হয়। দারিদ্রের বিত্ত দূর হয়, ধনীর মহাধন লাভ হয়। শত্রুতা থাকলে মিত্রতা লাভ হবে। জলে স্থলে যজ্ঞ দেবতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, সীবলী গুণকথা স্মরণ করলে মুক্ত হওয়া যায়। বৌদ্ধরা আজও বিশ্বাস করেন সীবলী পরিত্রাণ সূত্রপাঠ ও পূজা করলে কেউ অভাবী হন না। তাই বৌদ্ধরা ঘরে ঘরে সীবলী পরিত্রাণ সূত্র পাঠ ও সীবলী পূজা করেন। এ সীবলী ব্রতকথা নামক পুঁথি বা কাহিনী পড়তে হয়। এতে সুখ লাভ, দুঃখ দুর্দশা কিংবা বিপদ হতে মুক্তি লাভে মানুষ মানত স্বরূপ এ পূজা করে থাকেন । বৌদ্ধশাস্ত্র ত্রিপিটকে থেরগাথা গ্রন্থে এবং অন্যান্য পুস্তকে সীবলীর জীবন কাহিনি ও সীবলী পরিত্রাণ সূত্র আছে। সীবলী পূজার নানা উপকরণ হল মধু, ঘি, নারিকেল, চিড়া, আপেল, কমলা, মুড়ি, কলা, বিস্কুট, পেপে, আখ, মঙ্গলঘট, ছবি (বুদ্ধ ও সীবলী), ফুল, পান, সুপারি, মোম, ধূপ ও অন্যান্য উপকরণ। সীবলী পূজা করার সময় এক সাথে বুদ্ধ পূজাও করা হয়। পূজার সময় সীবলী ও বুদ্ধের ২টি ছবি সম্মুখ ভাগে রাখতে হয়। এতে মঙ্গল সাদিত হয়
সকলের জয়মঙ্গল হোক। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।
লাভী শ্রেষ্ট সীবলী মহাস্থবির এর পূজা হয়ত সকলে কম বেশি আমরা বিহারে কিংবা বাড়িতে সুন্দর ও সুচারুভাবে করে থাকি। সীবলী পূজা করলে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতি হয়, খাদ্য বস্ত্র অভাব দূর হয়। দারিদ্রের বিত্ত দূর হয়, ধনীর মহাধন লাভ হয়। শত্রুতা থাকলে মিত্রতা লাভ হবে। জলে স্থলে যজ্ঞ দেবতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, সীবলী গুণকথা স্মরণ করলে মুক্ত হওয়া যায়। বৌদ্ধরা আজও বিশ্বাস করেন সীবলী পরিত্রাণ সূত্রপাঠ ও পূজা করলে কেউ অভাবী হন না। তাই বৌদ্ধরা ঘরে ঘরে সীবলী পরিত্রাণ সূত্র পাঠ ও সীবলী পূজা করেন। এ সীবলী ব্রতকথা নামক পুঁথি বা কাহিনী পড়তে হয়। এতে সুখ লাভ, দুঃখ দুর্দশা কিংবা বিপদ হতে মুক্তি লাভে মানুষ মানত স্বরূপ এ পূজা করে থাকেন । বৌদ্ধশাস্ত্র ত্রিপিটকে থেরগাথা গ্রন্থে এবং অন্যান্য পুস্তকে সীবলীর জীবন কাহিনি ও সীবলী পরিত্রাণ সূত্র আছে। সীবলী পূজার নানা উপকরণ হল মধু, ঘি, নারিকেল, চিড়া, আপেল, কমলা, মুড়ি, কলা, বিস্কুট, পেপে, আখ, মঙ্গলঘট, ছবি (বুদ্ধ ও সীবলী), ফুল, পান, সুপারি, মোম, ধূপ ও অন্যান্য উপকরণ। সীবলী পূজা করার সময় এক সাথে বুদ্ধ পূজাও করা হয়। পূজার সময় সীবলী ও বুদ্ধের ২টি ছবি সম্মুখ ভাগে রাখতে হয়। এতে মঙ্গল সাদিত হয়
সকলের জয়মঙ্গল হোক। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।
Saturday, 22 June 2019
মহাকারুনিক ভগবান বুদ্ধ পবেয্যকবাসী ৩০ জন ভিক্ষুকে উপলক্ষ করিয়া দান শ্রেষ্ট কঠিন চীবর দানের প্রর্বতন করিয়াছিলেন। ভগবান বুদ্ধ এক সময় পঞ্চশত ষড়াভিঙ্ঘ অরহত ভিক্ষু সহ আকাশ পথে যাইয়া হিমালয়ের অনোবতপ্ত নামক মহাসরোবরে উপস্থিত হইলেন। দ্বিপদোত্তম অনুত্তর ধর্মরাজ তথাগত বুদ্ধ সহস্রদল পদ্মে উপবেশনে করিলেন এবং পঞ্চশত ভিক্ষু সংঘ তারাগনের ন্যায় বুদ্ধকে পরিবেষ্টন করিয়া শতদল পদ্মে উপবেশন করিলেন।এইরুপে অরহত শিষ্য পরিবৃত শাক্য পুত্রগন সূর্য্যের ন্যায় বিরোচিত হইতে লাগিলেন। এই অরহত ভিক্ষু সংঘকে সম্বোধন করিয়া শতপূণ্য লক্ষন তথাগত বুদ্ধ বলিলেন হে ভিক্ষু সংঘ তোমরা এই খানেই উপবিষ্ট হইয়া কটিন চীবর দানের মহাত্ন্য শ্রবণ কর।সেই শুভ মহুর্ত্তে বুদ্ধ কর্ত্তৃক আদিষ্ট হইয়া অরহত নার্গিত স্থবির বলিতে আরম্ভ করিলেন
১/ তিনি অনোবতপ্ত মহাসরোবরে স্বীয় কর্মফল ( এইরুপ প্রকাশ করিয়া ছিলেন আমি যখন বন্ধুমতি নগরে দানপতি ছিলাম,তখন।
২/নানাপ্রত্যয় দায়ক হইয়া ভিক্ষু সংঘকে যথাভিরুচি আচ্ছাদন, শয্যা.অন্ন,পানীয় ও যাগু প্রভূতি দ্বারা স্বহস্তে পূজা করিতাম।
৩/চতুদ্দর্শী, পঞ্চদর্শী ও প্রতিহায্য পক্ষে অষ্টাঙ্গিক উপোসথ পালন করিতাম।
৪/যাবজ্জীবন সেই ভিক্ষু ও বুদ্ধের শ্রাবক ছিলাম এবং তাহাদের প্রতি প্রসন্ন চিত্ত, সুমন ও পরিচর্য্যাকারী ছিলাম।
৫/আমি বর্ষাব্রতোল্তিত ভিক্ষু দিগকে কঠিন চীবর দান দিয়াছিলাম।প্রবারিত ভিক্ষুসংঘ আমার সেই দান গ্রহন করিলে।
৬/আমি করজোড়ে প্রদক্ষিন করিয়া কায় মন বাক্য ভিক্ষু সংঘের নির্কট ক্ষমা প্রার্থনা করিছিলাম।
৭/উত্তম গুন শ্রেষ্ট সংঘ মধ্যে কঠিন চীবর দান দিয়ে এই কল্প হইতে বিগত ত্রিশ কল্প পর্যন্ত দর্গতি অনুভব করি নাই।
৮/আটার কল্প দেবলোকে সুখ ভোগ করিয়াছি, চৌত্রিশবার দেবেন্দ্র হইয়া দেবকুলে রাজত্ব করিয়াছি।
৯/দেবরাজ্যের শ্রীধর সহস্রবার ব্রক্ষা হইয়াছি।মনুষ্য কুলে জম্ম পরিগ্রহ করিলে ধনঢ্য কুলেই উৎপন্ন হইতাম।
১০/মধ্যে মধ্যে চক্রবর্তী সুখ ও লাভ করিয়াছি।গননাতীত বিপুল প্রদেশ রাজ্যও ছিলাম
১১/ভোগ সম্পত্তিতে আমার উনতা হয় নাই।ইহা কঠিন চীবর দানের ফল।যেখানে যেখানে উংপন্ন ইহতাম তথায় সর্ববিধ সম্পদ লাভ করিয়া পরিষদের উত্তম হইতাম।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১২/সুরম্য দেবলোক ত্যাগ করিয়া মানবকুলে উৎপন্ন হইলেও মানুষ্যদের মধ্যে উত্তম হইতাম।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৩/আমি সেই কুশল কর্ম দ্বারাই দেব নর লোকে সকলেরই প্রিয় পাত্র হইয়াছিলাম। সেইরুপ ভন্দ্র কর্মের ফলে এখন আমি অচলপদ (অরহত্ত্ব)প্রাপ্ত হইয়াছি।
১৪/অহো আমার দ্বারা সুন্দর কর্মই কৃত হইয়াছিল।তখন আমি সেই দান দিয়াছি,তৎপ্রভাবে দুর্গতি কি তাহা জানি নাই।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৫/আমি শুধু দেবও মনুষ্য এই দুই ভবেই উৎপন্ন হইয়াছি।অন্যগতি জানি না।ইহাও কঠিন চীবর দারের ফল।
১৬/ক্ষত্রিয় ও ব্রাক্ষানকুলে জম্ম গ্রহন করিতাম।হীনকুলে জম্ম গ্রহন করি নাই।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৭/জগতে প্রচলিত যত প্রকারের দান আছে সর্বাপেক্ষা কঠিন চীবর দানই শ্রেষ্ট এই দান দ্বারা অগ্র শ্রেষ্ট সর্ব প্রকার পূণ্যস্থ লাভ হয়।
১৮/ছোট বড় যত প্রকারের দান আছে একখানা কঠিন চীবর দানের ফলের তুলনায় ঐ দান ষোড়শংশের একাংশ ও হয় না
১৯/অকনিষ্ট ব্রক্ষালোক পরিমান উচ্চ রৌপ্যময় পর্বত দান করিলে ও একখানি কঠিন চীবর দানের তুলনায় ঐ রোপ্য পর্বত দানের পূণ্য ষোলভাগের একভাগ পরিমান হয় না।
২০/ভিক্ষু সংঘের যাবতীয় ব্যবহার্য্য বস্ত সবর্দা সংঘকে প্রদান করিলে ও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ পূণ্য হয় না
২১/সুমেরু পর্বত প্রমান রাশি করিয়া সংঘ মধ্যে ত্রিচীবর দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ ও হয় না।
২২/চুরাশি হাজার বিহার নির্মান করাইয়া দান করিলেও একটি ধাতু মন্দির দান পূণ্যের ষোড়শাংশের একাংশ পূণ্যেও হয় না।
২৩/অকনিষ্ট ব্রক্ষলোক পরিমান উচ্চ সুর্বণ নির্মিত ধাতু মন্দির নির্মান করাইয়া দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ পূণ্যে ও হয় না।
২৪/হস্তী অশ্ব অশ্বতরী,রথও মনিমুত্তা বিভূষিতা কণ্যা,অযুত অযুত পরিমান দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দানের পূণ্যের ষোলভাগের একভাগে ও পূণ্যের ও হয় না।
২৫/ভিক্ষুদের পঞ্চ ফল যুক্ত ও পঞ্চ দোষ বিবর্জিত অথ্যাৎ সংঘের দোষ হননকারী বলিয়াই কঠিন চীবর দান অতি উত্তম।
২৬/আমি সেই কুশল কর্ম চেতনা ও প্রার্থনা দ্বারা মনুষ্য দেহ পরিত্যাগ করিয়া তাবতিংশ দেবলোকে দিব্য সুখ ভোগ করিয়া ছিলাম।
২৭/আমরা সুকৃত কর্মের ফলে তথায় সুর্বন বর্ণ প্রভাবস্বর বিমান পাইয়া ছিলাম। সেই শত যোজন দীর্ঘ ত্রিশযোজন প্রস্থ ও ষাট যোজন উচ্চ স্বগীয় প্রসাদে উৎপন্ন হইয়াছিলাম।
২৮/সেই শুভ বিমান সূর্য্য বর্ণ রুচিকর প্রভাস্বর ও কাঞ্চন জালাচ্ছন্নছিল। আমরা শরীর সূর্য্যের অনুপাম ষড়রশ্শির ন্যায় আকাশে শুভা পাইত।
২৯/আমরা দেবভবন সর্বদা নৃত্যগীত, সমাকুল ও কির্ণছিল।আমরা শয্যার চারদিকে ষাটি হাজার নানাবিধ দিব্য বাদ্যের মধুর ধবনি আমাকে নিন্দ্রা হইতে জাগ্রত করিত।
৩০/হস্থীযান অশ্বযান শিবিকা সংন্দন সমস্তই লাভ করিয়াছিলাম ইহাও আমার কঠিন চীবর দানের ফল।
৩১/বৃক্ষাগ্রে পর্বতাগ্রে আকাশে ভূমিতে সেখানে যখন আমি বস্ত্র ইচ্ছা করিতাম সকল সময়েই আমি তাহা লাভ করিয়াছিলাম।
৩২/আমি ইচ্ছা করিলে সমাগ্র পৃথিবী বস্ত্রে আচ্ছাদন করিতে পারিতাম ইহাও আমার কঠিন চীবর দানের ফল।
৩৩/বুদ্ধ পচ্ছেকা বুদ্ধ ও শ্রাবক দিগকে কঠিন চীবর দান দিলে সেই দান ফল শ্রেষ্ট বলিয়া সম্বুদ্ধগন কর্ত্তৃক বর্নিত হয়েছে।
৩৪/যেহেতু শিক্ষাকামী ভিক্ষুদের আপত্তি (পাপ) নাশ করে বলিয়াই সব দানের মধ্যে কঠিন চীবর দানই শ্রেষ্ট বলিয়া কথিত হইয়াছে।
৩৫/সেই বুদ্ধ পচ্ছেক বুদ্ধ ও শ্রাবকগন এই শ্রেষ্ট দান দ্বারাই উত্তম অরহত্ত্ব ফল লাভ করিয়াছেন।
৩৬/তদ্বেতুই পন্ডিডগন স্বীয় কল্যাণ কামনা করিয়া সংঘকে অন্তত অল্প দান করিয়াও মনুষ্য দেব ও নির্ববান সুখ করেন।
লেখক: প্রজ্ঞাপ্রিয় স্থবির, উপাধ্যক্ষ চকরিয়া মানিকপুর বিজয়ানন্দ বৌদ্ধ বিহার
১/ তিনি অনোবতপ্ত মহাসরোবরে স্বীয় কর্মফল ( এইরুপ প্রকাশ করিয়া ছিলেন আমি যখন বন্ধুমতি নগরে দানপতি ছিলাম,তখন।
২/নানাপ্রত্যয় দায়ক হইয়া ভিক্ষু সংঘকে যথাভিরুচি আচ্ছাদন, শয্যা.অন্ন,পানীয় ও যাগু প্রভূতি দ্বারা স্বহস্তে পূজা করিতাম।
৩/চতুদ্দর্শী, পঞ্চদর্শী ও প্রতিহায্য পক্ষে অষ্টাঙ্গিক উপোসথ পালন করিতাম।
৪/যাবজ্জীবন সেই ভিক্ষু ও বুদ্ধের শ্রাবক ছিলাম এবং তাহাদের প্রতি প্রসন্ন চিত্ত, সুমন ও পরিচর্য্যাকারী ছিলাম।
৫/আমি বর্ষাব্রতোল্তিত ভিক্ষু দিগকে কঠিন চীবর দান দিয়াছিলাম।প্রবারিত ভিক্ষুসংঘ আমার সেই দান গ্রহন করিলে।
৬/আমি করজোড়ে প্রদক্ষিন করিয়া কায় মন বাক্য ভিক্ষু সংঘের নির্কট ক্ষমা প্রার্থনা করিছিলাম।
৭/উত্তম গুন শ্রেষ্ট সংঘ মধ্যে কঠিন চীবর দান দিয়ে এই কল্প হইতে বিগত ত্রিশ কল্প পর্যন্ত দর্গতি অনুভব করি নাই।
৮/আটার কল্প দেবলোকে সুখ ভোগ করিয়াছি, চৌত্রিশবার দেবেন্দ্র হইয়া দেবকুলে রাজত্ব করিয়াছি।
৯/দেবরাজ্যের শ্রীধর সহস্রবার ব্রক্ষা হইয়াছি।মনুষ্য কুলে জম্ম পরিগ্রহ করিলে ধনঢ্য কুলেই উৎপন্ন হইতাম।
১০/মধ্যে মধ্যে চক্রবর্তী সুখ ও লাভ করিয়াছি।গননাতীত বিপুল প্রদেশ রাজ্যও ছিলাম
১১/ভোগ সম্পত্তিতে আমার উনতা হয় নাই।ইহা কঠিন চীবর দানের ফল।যেখানে যেখানে উংপন্ন ইহতাম তথায় সর্ববিধ সম্পদ লাভ করিয়া পরিষদের উত্তম হইতাম।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১২/সুরম্য দেবলোক ত্যাগ করিয়া মানবকুলে উৎপন্ন হইলেও মানুষ্যদের মধ্যে উত্তম হইতাম।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৩/আমি সেই কুশল কর্ম দ্বারাই দেব নর লোকে সকলেরই প্রিয় পাত্র হইয়াছিলাম। সেইরুপ ভন্দ্র কর্মের ফলে এখন আমি অচলপদ (অরহত্ত্ব)প্রাপ্ত হইয়াছি।
১৪/অহো আমার দ্বারা সুন্দর কর্মই কৃত হইয়াছিল।তখন আমি সেই দান দিয়াছি,তৎপ্রভাবে দুর্গতি কি তাহা জানি নাই।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৫/আমি শুধু দেবও মনুষ্য এই দুই ভবেই উৎপন্ন হইয়াছি।অন্যগতি জানি না।ইহাও কঠিন চীবর দারের ফল।
১৬/ক্ষত্রিয় ও ব্রাক্ষানকুলে জম্ম গ্রহন করিতাম।হীনকুলে জম্ম গ্রহন করি নাই।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৭/জগতে প্রচলিত যত প্রকারের দান আছে সর্বাপেক্ষা কঠিন চীবর দানই শ্রেষ্ট এই দান দ্বারা অগ্র শ্রেষ্ট সর্ব প্রকার পূণ্যস্থ লাভ হয়।
১৮/ছোট বড় যত প্রকারের দান আছে একখানা কঠিন চীবর দানের ফলের তুলনায় ঐ দান ষোড়শংশের একাংশ ও হয় না
১৯/অকনিষ্ট ব্রক্ষালোক পরিমান উচ্চ রৌপ্যময় পর্বত দান করিলে ও একখানি কঠিন চীবর দানের তুলনায় ঐ রোপ্য পর্বত দানের পূণ্য ষোলভাগের একভাগ পরিমান হয় না।
২০/ভিক্ষু সংঘের যাবতীয় ব্যবহার্য্য বস্ত সবর্দা সংঘকে প্রদান করিলে ও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ পূণ্য হয় না
২১/সুমেরু পর্বত প্রমান রাশি করিয়া সংঘ মধ্যে ত্রিচীবর দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ ও হয় না।
২২/চুরাশি হাজার বিহার নির্মান করাইয়া দান করিলেও একটি ধাতু মন্দির দান পূণ্যের ষোড়শাংশের একাংশ পূণ্যেও হয় না।
২৩/অকনিষ্ট ব্রক্ষলোক পরিমান উচ্চ সুর্বণ নির্মিত ধাতু মন্দির নির্মান করাইয়া দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ পূণ্যে ও হয় না।
২৪/হস্তী অশ্ব অশ্বতরী,রথও মনিমুত্তা বিভূষিতা কণ্যা,অযুত অযুত পরিমান দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দানের পূণ্যের ষোলভাগের একভাগে ও পূণ্যের ও হয় না।
২৫/ভিক্ষুদের পঞ্চ ফল যুক্ত ও পঞ্চ দোষ বিবর্জিত অথ্যাৎ সংঘের দোষ হননকারী বলিয়াই কঠিন চীবর দান অতি উত্তম।
২৬/আমি সেই কুশল কর্ম চেতনা ও প্রার্থনা দ্বারা মনুষ্য দেহ পরিত্যাগ করিয়া তাবতিংশ দেবলোকে দিব্য সুখ ভোগ করিয়া ছিলাম।
২৭/আমরা সুকৃত কর্মের ফলে তথায় সুর্বন বর্ণ প্রভাবস্বর বিমান পাইয়া ছিলাম। সেই শত যোজন দীর্ঘ ত্রিশযোজন প্রস্থ ও ষাট যোজন উচ্চ স্বগীয় প্রসাদে উৎপন্ন হইয়াছিলাম।
২৮/সেই শুভ বিমান সূর্য্য বর্ণ রুচিকর প্রভাস্বর ও কাঞ্চন জালাচ্ছন্নছিল। আমরা শরীর সূর্য্যের অনুপাম ষড়রশ্শির ন্যায় আকাশে শুভা পাইত।
২৯/আমরা দেবভবন সর্বদা নৃত্যগীত, সমাকুল ও কির্ণছিল।আমরা শয্যার চারদিকে ষাটি হাজার নানাবিধ দিব্য বাদ্যের মধুর ধবনি আমাকে নিন্দ্রা হইতে জাগ্রত করিত।
৩০/হস্থীযান অশ্বযান শিবিকা সংন্দন সমস্তই লাভ করিয়াছিলাম ইহাও আমার কঠিন চীবর দানের ফল।
৩১/বৃক্ষাগ্রে পর্বতাগ্রে আকাশে ভূমিতে সেখানে যখন আমি বস্ত্র ইচ্ছা করিতাম সকল সময়েই আমি তাহা লাভ করিয়াছিলাম।
৩২/আমি ইচ্ছা করিলে সমাগ্র পৃথিবী বস্ত্রে আচ্ছাদন করিতে পারিতাম ইহাও আমার কঠিন চীবর দানের ফল।
৩৩/বুদ্ধ পচ্ছেকা বুদ্ধ ও শ্রাবক দিগকে কঠিন চীবর দান দিলে সেই দান ফল শ্রেষ্ট বলিয়া সম্বুদ্ধগন কর্ত্তৃক বর্নিত হয়েছে।
৩৪/যেহেতু শিক্ষাকামী ভিক্ষুদের আপত্তি (পাপ) নাশ করে বলিয়াই সব দানের মধ্যে কঠিন চীবর দানই শ্রেষ্ট বলিয়া কথিত হইয়াছে।
৩৫/সেই বুদ্ধ পচ্ছেক বুদ্ধ ও শ্রাবকগন এই শ্রেষ্ট দান দ্বারাই উত্তম অরহত্ত্ব ফল লাভ করিয়াছেন।
৩৬/তদ্বেতুই পন্ডিডগন স্বীয় কল্যাণ কামনা করিয়া সংঘকে অন্তত অল্প দান করিয়াও মনুষ্য দেব ও নির্ববান সুখ করেন।
লেখক: প্রজ্ঞাপ্রিয় স্থবির, উপাধ্যক্ষ চকরিয়া মানিকপুর বিজয়ানন্দ বৌদ্ধ বিহার
বুদ্ধের অচিন্তনীয় গুণের কথাগুলো এই পোষ্টাতে বলা হয়েছেন, আপনি এবং আপনার কিছু সময় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং এই ওয়েবসাইটি কে ভিজিট করতে ভুলবেন না
®#বদ্ধ_বলেছেন_অতীত_ও_ভবিষ্যৎ_চিন্তনীয়_নয় ?
-------- সংগ্রহ করছি
বুদ্ধ বলেছেন, পালিঃ-
অতীতং মানুসোচন্তি, নাপ্পাটিকাংখে অনাগতাং,
পচ্চুপ্পন্নে চ যে ধম্মে, তত্থ তত্থ বিপস্সতি।
অনুবাদঃ-
বুদ্ধ বলেছেন, অতীতে ও ভবিষ্যৎ মানুষের চিন্তনিয় নয়, বর্তমানকে ভাব। অতীতে আমি মহাপাপ করেছি, এসব নিয়ে মাথা ঘামাবার প্রয়োজন নেই, হতাশ হবারও কারণ নেই। ভবিষ্যতে কি হব, কেমনে মরব, মরে কোথায় যাব, যাব কি যাব না, হব কি হব না-ইত্যাদি চিন্তামনে স্হান দেয়া উচিত নয়। বর্তমানে আমি কি করছি,,এটিই আমার ভাবনার একমাত্র বিষয়। তাহলে আমি কি কোন সৎকর্ম করার কথা চিন্তা করছি? খুব ভাল কথা, দান-শীল-ভাবনায় রত হই না কেন? দান বড় পুণ্যময় কাজ, বার বার করলে জন্মে জন্মে ভোগ সম্পত্তির অধিকারী হওয়া যায়। দানের প্রভাবে ভোগ্যবস্তুর অভাব কোনদিন ভোগ করতে হবে না। শীল সে তো সদাচার, চরিত্র গঠনের হাতিয়ার। সৎ চরিত্রবান ও সৎ জীবনের অধিকারী হতে চাইলে শীল-পালন ও শীলের অনুশীলন একান্ত অপরিহার্য। তবে এই দুই কুশল কর্মের গতি সুগতি ভূমি পর্যন্ত অর্থাৎ মনুষ্যলোকে ও ছয় দেবলোক পর্যন্ত। পুণ্যক্ষয়ে এসব স্হান থেকে চলে যেতে হবে দূরে, বহুদূরে হঠাৎ ছিটকে পড়ে কোন্ অতলে তলিয়ে যাবে এর কোন ইয়ত্তা নেই। সেজন্য এ দু'টোর সুখ-ভোগ কি আদৌ সভার কাম্য?
এবার ভাবনা। কোন বিষয় একাগ্রমনে পুনঃ পুনঃ স্মরণ করাই হল ভাবনা। ভাবনা প্রধানতঃ দুই প্রকার- শমথ ও বিদর্শন। শমথ ভাবনা আবার চল্লিশ প্রকার। চিত্তের ক্লেশ অর্থাৎ লোভ-দ্বেষ-মোহকে সংযত করে যে সাধনা সেই চিত্ত শান্তকর ধ্যান-সাধনাকে বলা হয় শমথ ভাবনা।
চিত্তের ক্লেশসমূহকে সমূলে বিনাশ করে প্রজ্ঞা উৎপাদন করার নামই বিদর্শন ভাবনা। অবিরত স্মৃতি রাখার নাধ্যমে এ বিদর্শন ভাবনা করতে হয়। বিদর্শন ভাবনার প্রধান উদ্দেশ্য সত্যকে জানা, সম্যকরূপে জানা এবং নিজেকে শীল-সমাধি-প্রজ্ঞা ও বিমুক্তির সাধনায় সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
শীলের আলোচনা পূর্বেই করেছি। সমাধি হল চিত্তের স্হৈর্য বা একাগ্র অবস্হা, যার মাধ্যমে প্রজ্ঞালোকে পদার্পণ করা যায়। প্রজ্ঞা হল বিষয়ের যথাভূত দর্শন জ্ঞান। প্রজ্ঞা অবিদ্যার অন্ধকার বিনাশ করে বিদ্যালোক উৎপন্ন করে। প্রজ্ঞা পঞ্চস্কন্ধের অনিত্য-দুঃখ-অনাত্মভাব প্রকটিত করে এবং পারমার্থিক ভাবে দুঃখ আর্যসত্য বা চতুরার্য সত্যকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। বিমুক্তি হল অবিদ্যা তৃষ্ণার মূলোৎপাটন এবং নির্বাণরূপ পরম শান্তিলোকে অবতরণ.......
বৌদ্ধোচিত কর্মের দ্বারাই মানুষ বৌদ্ধ হয়.....
-------- সংগ্রহ করছি
বুদ্ধ বলেছেন, পালিঃ-
অতীতং মানুসোচন্তি, নাপ্পাটিকাংখে অনাগতাং,
পচ্চুপ্পন্নে চ যে ধম্মে, তত্থ তত্থ বিপস্সতি।
অনুবাদঃ-
বুদ্ধ বলেছেন, অতীতে ও ভবিষ্যৎ মানুষের চিন্তনিয় নয়, বর্তমানকে ভাব। অতীতে আমি মহাপাপ করেছি, এসব নিয়ে মাথা ঘামাবার প্রয়োজন নেই, হতাশ হবারও কারণ নেই। ভবিষ্যতে কি হব, কেমনে মরব, মরে কোথায় যাব, যাব কি যাব না, হব কি হব না-ইত্যাদি চিন্তামনে স্হান দেয়া উচিত নয়। বর্তমানে আমি কি করছি,,এটিই আমার ভাবনার একমাত্র বিষয়। তাহলে আমি কি কোন সৎকর্ম করার কথা চিন্তা করছি? খুব ভাল কথা, দান-শীল-ভাবনায় রত হই না কেন? দান বড় পুণ্যময় কাজ, বার বার করলে জন্মে জন্মে ভোগ সম্পত্তির অধিকারী হওয়া যায়। দানের প্রভাবে ভোগ্যবস্তুর অভাব কোনদিন ভোগ করতে হবে না। শীল সে তো সদাচার, চরিত্র গঠনের হাতিয়ার। সৎ চরিত্রবান ও সৎ জীবনের অধিকারী হতে চাইলে শীল-পালন ও শীলের অনুশীলন একান্ত অপরিহার্য। তবে এই দুই কুশল কর্মের গতি সুগতি ভূমি পর্যন্ত অর্থাৎ মনুষ্যলোকে ও ছয় দেবলোক পর্যন্ত। পুণ্যক্ষয়ে এসব স্হান থেকে চলে যেতে হবে দূরে, বহুদূরে হঠাৎ ছিটকে পড়ে কোন্ অতলে তলিয়ে যাবে এর কোন ইয়ত্তা নেই। সেজন্য এ দু'টোর সুখ-ভোগ কি আদৌ সভার কাম্য?
এবার ভাবনা। কোন বিষয় একাগ্রমনে পুনঃ পুনঃ স্মরণ করাই হল ভাবনা। ভাবনা প্রধানতঃ দুই প্রকার- শমথ ও বিদর্শন। শমথ ভাবনা আবার চল্লিশ প্রকার। চিত্তের ক্লেশ অর্থাৎ লোভ-দ্বেষ-মোহকে সংযত করে যে সাধনা সেই চিত্ত শান্তকর ধ্যান-সাধনাকে বলা হয় শমথ ভাবনা।
চিত্তের ক্লেশসমূহকে সমূলে বিনাশ করে প্রজ্ঞা উৎপাদন করার নামই বিদর্শন ভাবনা। অবিরত স্মৃতি রাখার নাধ্যমে এ বিদর্শন ভাবনা করতে হয়। বিদর্শন ভাবনার প্রধান উদ্দেশ্য সত্যকে জানা, সম্যকরূপে জানা এবং নিজেকে শীল-সমাধি-প্রজ্ঞা ও বিমুক্তির সাধনায় সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
শীলের আলোচনা পূর্বেই করেছি। সমাধি হল চিত্তের স্হৈর্য বা একাগ্র অবস্হা, যার মাধ্যমে প্রজ্ঞালোকে পদার্পণ করা যায়। প্রজ্ঞা হল বিষয়ের যথাভূত দর্শন জ্ঞান। প্রজ্ঞা অবিদ্যার অন্ধকার বিনাশ করে বিদ্যালোক উৎপন্ন করে। প্রজ্ঞা পঞ্চস্কন্ধের অনিত্য-দুঃখ-অনাত্মভাব প্রকটিত করে এবং পারমার্থিক ভাবে দুঃখ আর্যসত্য বা চতুরার্য সত্যকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। বিমুক্তি হল অবিদ্যা তৃষ্ণার মূলোৎপাটন এবং নির্বাণরূপ পরম শান্তিলোকে অবতরণ.......
বৌদ্ধোচিত কর্মের দ্বারাই মানুষ বৌদ্ধ হয়.....
®#বুদ্ধ_বলেছেন_কর্মই_মানুষের_ভেদাভেদ_সৃষ্টিকারী
#রাজা প্রসেনজিতের অন্যতম পুরোহিত ব্রাহ্মণ তোদেয়,বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী হয়েও কৃপণ স্বভাবের ছিলেন। মহাপ্লাবন যেমন ঘুমন্ত লোককে হঠাৎ ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি মোহাচ্ছন্ন ও মত্ত তোদেয়কে মৃত্যু একদিন ছিনিয় নিয়ে গেল। তাঁর সুদর্শন তরুন পুত্র 'শুভ' উত্তরাধিকার সুত্রে ঐ সম্পদের মালিক হলেও পিতার কৃপণতা পায়নি। সে একটি কুকুর পুষল। এর প্রতি তার আদর যত্নের সীমা ছিল না। একদিন বুদ্ধ একাকী ভিক্ষাপাত্র হস্তে গৃহপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে বুদ্ধের দিকে ছুটে গেল। তিনি শান্ত স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে কুকুরের পানে চেয়ে বল্লেন- তোদেয়, তুমি যখন এ গৃহের অধিপতি ছিলে, তখন সারাজীবন লোক তাড়িয়েছ, আজও কুকুর হয়ে আমায় তাড়াচ্ছ, তোমার স্হান কোথায়? কুকুর বুদ্ধের শান্ত-স্নিগ্ধ চাহনি সহ্য করতে না পেরে নত মস্তকে উনুনের ধারে গিয়ে শুয়ে পড়ল। বুদ্ধ বেড়িয়ে গেলেন। 'শুভ' বাড়ীতে ছিল না, ফিরে এসে সবকিছু শুনে রেগে জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল এর সত্যাসত্য। বুদ্ধ তাকে আরো বল্লেন কুকুরকে তোয়াজ করলে তোমার পিতার গুপ্তধনের খোঁজও মিলবে। তখন জানতে পারবে এ তোমার পিতা কি-না। বুদ্ধের নির্দেশ মত সে কুকুরকে খুবই তোয়াজ করতে লাগল। অতঃপর কুকুর প্রীত হয়ে গুপ্ত সম্পদের সেখানে গিয়ে মাটী আঁচড়াতে লাগল। মাটী খুঁড়ে সম্পদ পেয়ে তার বিস্ময়ের সীমা রইল না। বুদ্ধের প্রতি তার ক্রোধ ভক্তিতে রূপান্তরিত হল। সে থেকে কর্মের বিচিত্র গতি তার মনকে তোরপাড় করতে লাগল। শুভ অনেক ভেবে-চিন্তে একদিন জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করল- ভবৎ গৌতম, মানুষের মধ্যে এত ভেদাভেদ কেন? বুদ্ধ বললেন, হে 'শুভ, প্রাণীগণ কর্মসর্বস্ব, কর্মের উত্তরাধিকারী, কর্মানুসারী, কর্ম তাদের বন্ধু, কর্ম তাদের শরণ, কারণ কর্মই তাদের ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী। কর্ম এভাবে অল্পায়ু-দীর্ঘায়ু, রুগ্ন-নীরোগ, দুর্বল-সবল, ক্ষমতাহীন-ক্ষমতাবান, বিশ্রী-সুশ্রী, ধনী-দরিদ্র, কুলীন-অকুলীন, জ্ঞানী-অজ্ঞানী, ইত্যাদি হবার কারণ জীবের স্ব-স্ব কর্মফল। কর্মই তাদের বিভক্ত করে অধমে উত্তমে। তরুণ 'শুভ' কর্মচক্রে জীবের আবর্তনের জটিল রহস্যের বিচিত্র বর্ণনা শুণে মুগ্ধ হয়ে বলল- ভদন্ত আপনি আমার চোখ খুলে দিয়েছেন, আমি আপনার শরণাগত হলাম এবং আপনার প্রবর্তিত ধর্ম ও সঙ্ঘের শরণ নিলাম......
#রাজা প্রসেনজিতের অন্যতম পুরোহিত ব্রাহ্মণ তোদেয়,বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী হয়েও কৃপণ স্বভাবের ছিলেন। মহাপ্লাবন যেমন ঘুমন্ত লোককে হঠাৎ ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি মোহাচ্ছন্ন ও মত্ত তোদেয়কে মৃত্যু একদিন ছিনিয় নিয়ে গেল। তাঁর সুদর্শন তরুন পুত্র 'শুভ' উত্তরাধিকার সুত্রে ঐ সম্পদের মালিক হলেও পিতার কৃপণতা পায়নি। সে একটি কুকুর পুষল। এর প্রতি তার আদর যত্নের সীমা ছিল না। একদিন বুদ্ধ একাকী ভিক্ষাপাত্র হস্তে গৃহপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে বুদ্ধের দিকে ছুটে গেল। তিনি শান্ত স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে কুকুরের পানে চেয়ে বল্লেন- তোদেয়, তুমি যখন এ গৃহের অধিপতি ছিলে, তখন সারাজীবন লোক তাড়িয়েছ, আজও কুকুর হয়ে আমায় তাড়াচ্ছ, তোমার স্হান কোথায়? কুকুর বুদ্ধের শান্ত-স্নিগ্ধ চাহনি সহ্য করতে না পেরে নত মস্তকে উনুনের ধারে গিয়ে শুয়ে পড়ল। বুদ্ধ বেড়িয়ে গেলেন। 'শুভ' বাড়ীতে ছিল না, ফিরে এসে সবকিছু শুনে রেগে জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল এর সত্যাসত্য। বুদ্ধ তাকে আরো বল্লেন কুকুরকে তোয়াজ করলে তোমার পিতার গুপ্তধনের খোঁজও মিলবে। তখন জানতে পারবে এ তোমার পিতা কি-না। বুদ্ধের নির্দেশ মত সে কুকুরকে খুবই তোয়াজ করতে লাগল। অতঃপর কুকুর প্রীত হয়ে গুপ্ত সম্পদের সেখানে গিয়ে মাটী আঁচড়াতে লাগল। মাটী খুঁড়ে সম্পদ পেয়ে তার বিস্ময়ের সীমা রইল না। বুদ্ধের প্রতি তার ক্রোধ ভক্তিতে রূপান্তরিত হল। সে থেকে কর্মের বিচিত্র গতি তার মনকে তোরপাড় করতে লাগল। শুভ অনেক ভেবে-চিন্তে একদিন জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করল- ভবৎ গৌতম, মানুষের মধ্যে এত ভেদাভেদ কেন? বুদ্ধ বললেন, হে 'শুভ, প্রাণীগণ কর্মসর্বস্ব, কর্মের উত্তরাধিকারী, কর্মানুসারী, কর্ম তাদের বন্ধু, কর্ম তাদের শরণ, কারণ কর্মই তাদের ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী। কর্ম এভাবে অল্পায়ু-দীর্ঘায়ু, রুগ্ন-নীরোগ, দুর্বল-সবল, ক্ষমতাহীন-ক্ষমতাবান, বিশ্রী-সুশ্রী, ধনী-দরিদ্র, কুলীন-অকুলীন, জ্ঞানী-অজ্ঞানী, ইত্যাদি হবার কারণ জীবের স্ব-স্ব কর্মফল। কর্মই তাদের বিভক্ত করে অধমে উত্তমে। তরুণ 'শুভ' কর্মচক্রে জীবের আবর্তনের জটিল রহস্যের বিচিত্র বর্ণনা শুণে মুগ্ধ হয়ে বলল- ভদন্ত আপনি আমার চোখ খুলে দিয়েছেন, আমি আপনার শরণাগত হলাম এবং আপনার প্রবর্তিত ধর্ম ও সঙ্ঘের শরণ নিলাম......
Subscribe to:
Posts (Atom)