®#বুদ্ধ_বলেছেন_কর্মই_মানুষের_ভেদাভেদ_সৃষ্টিকারী
#রাজা প্রসেনজিতের অন্যতম পুরোহিত ব্রাহ্মণ তোদেয়,বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী হয়েও কৃপণ স্বভাবের ছিলেন। মহাপ্লাবন যেমন ঘুমন্ত লোককে হঠাৎ ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি মোহাচ্ছন্ন ও মত্ত তোদেয়কে মৃত্যু একদিন ছিনিয় নিয়ে গেল। তাঁর সুদর্শন তরুন পুত্র 'শুভ' উত্তরাধিকার সুত্রে ঐ সম্পদের মালিক হলেও পিতার কৃপণতা পায়নি। সে একটি কুকুর পুষল। এর প্রতি তার আদর যত্নের সীমা ছিল না। একদিন বুদ্ধ একাকী ভিক্ষাপাত্র হস্তে গৃহপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে বুদ্ধের দিকে ছুটে গেল। তিনি শান্ত স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে কুকুরের পানে চেয়ে বল্লেন- তোদেয়, তুমি যখন এ গৃহের অধিপতি ছিলে, তখন সারাজীবন লোক তাড়িয়েছ, আজও কুকুর হয়ে আমায় তাড়াচ্ছ, তোমার স্হান কোথায়? কুকুর বুদ্ধের শান্ত-স্নিগ্ধ চাহনি সহ্য করতে না পেরে নত মস্তকে উনুনের ধারে গিয়ে শুয়ে পড়ল। বুদ্ধ বেড়িয়ে গেলেন। 'শুভ' বাড়ীতে ছিল না, ফিরে এসে সবকিছু শুনে রেগে জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল এর সত্যাসত্য। বুদ্ধ তাকে আরো বল্লেন কুকুরকে তোয়াজ করলে তোমার পিতার গুপ্তধনের খোঁজও মিলবে। তখন জানতে পারবে এ তোমার পিতা কি-না। বুদ্ধের নির্দেশ মত সে কুকুরকে খুবই তোয়াজ করতে লাগল। অতঃপর কুকুর প্রীত হয়ে গুপ্ত সম্পদের সেখানে গিয়ে মাটী আঁচড়াতে লাগল। মাটী খুঁড়ে সম্পদ পেয়ে তার বিস্ময়ের সীমা রইল না। বুদ্ধের প্রতি তার ক্রোধ ভক্তিতে রূপান্তরিত হল। সে থেকে কর্মের বিচিত্র গতি তার মনকে তোরপাড় করতে লাগল। শুভ অনেক ভেবে-চিন্তে একদিন জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করল- ভবৎ গৌতম, মানুষের মধ্যে এত ভেদাভেদ কেন? বুদ্ধ বললেন, হে 'শুভ, প্রাণীগণ কর্মসর্বস্ব, কর্মের উত্তরাধিকারী, কর্মানুসারী, কর্ম তাদের বন্ধু, কর্ম তাদের শরণ, কারণ কর্মই তাদের ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী। কর্ম এভাবে অল্পায়ু-দীর্ঘায়ু, রুগ্ন-নীরোগ, দুর্বল-সবল, ক্ষমতাহীন-ক্ষমতাবান, বিশ্রী-সুশ্রী, ধনী-দরিদ্র, কুলীন-অকুলীন, জ্ঞানী-অজ্ঞানী, ইত্যাদি হবার কারণ জীবের স্ব-স্ব কর্মফল। কর্মই তাদের বিভক্ত করে অধমে উত্তমে। তরুণ 'শুভ' কর্মচক্রে জীবের আবর্তনের জটিল রহস্যের বিচিত্র বর্ণনা শুণে মুগ্ধ হয়ে বলল- ভদন্ত আপনি আমার চোখ খুলে দিয়েছেন, আমি আপনার শরণাগত হলাম এবং আপনার প্রবর্তিত ধর্ম ও সঙ্ঘের শরণ নিলাম......
No comments:
Post a Comment