Friday, 28 June 2019

বুদ্ধ নিজেও রোগির সেবা করছেন,আমি এবং আপনারাও মাতা ও পিতার ঔষুধ দিয়ে সেবা করবেন ও কোনো রোগি মানুষ দেখলে আপনার সমম্ত অনুযায়ী ঔষুধ দান করবেন, আরো ভালো কিছু উপদেশ বাণী পাওয়ার জন্য এই ওয়েবসাইটি ভিজিট করতে ভুলবেন না

ভগবান বুদ্ধ ও এক রোগী ভিক্ষু
...............................................................

নৈতিক ও মানবিক গুণাবলিতে ভরপুর। ভগবান বুদ্ধ জন্ম-জন্মান্তরে দশ পারমীর চর্চা করে নৈতিক চরিত্রের উৎকর্ষতা সাধনপূর্বক বুদ্ধত্ব লাভ করেছেন। বুদ্ধ শুধু নিজেই নৈতিক জীবনযাপন করেননি, তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্য এবং অনুসারীদেরও নৈতিক জীবনযাপনের শিক্ষা দিয়েছেন। নৈতিকতা ছিল মহামতি বুদ্ধের প্রচারিত ধর্মবাণীর মূল ভিত্তি। নিচে গৌতম বুদ্ধের জীবনে নৈতিকতা প্রদর্শনের নিদর্শন এবং নৈতিক উপদেশ সম্পর্কে এক ঘটনার সর্ম্পকে জানব।

বুদ্ধত্ব লাভের পর গৌতম বুদ্ধ পঁয়তাল্লিশ বছর সকল প্রাণির দুঃখমুক্তির জন্য ধর্ম প্রচার করেন। এসময় তিনি ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সকল প্রাণির সেবা ও কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। তাঁর শিষ্য-প্রশিষ্য এবং অনুসারীদের নৈতিক ও মানবিক কর্ম সম্পাদনের উপদেশ দিতেন। এখানে আমরা বুদ্ধের জীবনে নৈতিকতা প্রদর্শনের একটি কাহিনী পাঠ করব।
একটি ছোট বিহারে কয়েকজন ভিক্ষু থাকতেন। সেই বিহারে তিষ্য নামে একজন ভিক্ষু ছিলেন, যাঁর সাথে কারও সদ্ভাব ছিল না। সবাই তাঁকে এড়িয়ে চলতেন। একবার তিনি ভীষণ চর্মরোগে আক্রান্ত হন। তাঁর গায়ের ক্ষত থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে লাগল। এরকম তিনি যন্ত্রণাকাতর অবস্থায়ও তাঁর সেবায় কেউ এগিয়ে এলো না। হঠাৎ বুদ্ধ এ বিহারে আগমন করলে সেবা-শুশ্রুষাবিহীন মারাত্মক রোগাক্রান্ত এ ভিক্ষুকে দেখেন। বুদ্ধ নিজেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সেবায় লেগে যান।

তিনি সেবক আনন্দকে নিয়ে নিজ হাতে রোগীর ক্ষতস্থান পরিষ্কার করেন। তাঁকে স্নান করান। তারপর গা মুছিয়ে পরিষ্কার বিছানায় শুইয়ে দেন। বুদ্ধ বিহারের ভিক্ষুদের ডেকে রোগাক্রান্ত ভিক্ষুকে সেবা না করার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। বুদ্ধ তাঁদের কাছ থেকে সমস্ত ব্যাপার শুনে খুব অসন্তুষ্ট হন। তিনি তাঁদের আচরণকে অনৈতিক ও অমানবিক বলে তিরষ্কার করেন এবং হিংসা-বিদ্বেষ পরিত্যাগ করার উপদেশ দেন। হে ভিক্ষুগণ, তোমাদের কারো মা –বাবা কেও নেই দেখার জন্যা সেবা করার জন্যা, তোমরা নিজেরা যদি নিজেদের খেয়াল না রাখো তাহলে কে রাখবে?

অতঃপর তিনি তাঁদের বললেন, ‘দরিদ্রের সহায় হওয়া, অরক্ষিতকে রক্ষা করা, রোগীর সেবা করা, মোহাচ্ছন্নকে মোহমুক্ত করা সকলের নৈতিক কর্তব্য।’ তিনি আরও বললেন, ‘এ জগতে মাতা-পিতা, শ্রমণ-ব্রাহ্মণ, আর্তপীড়িত এবং গুরুজনের সেবায় সুখ লাভ করা যায়।’
উপদেশ দানের পর বুদ্ধ ভিক্ষুদের জন্য নিয়ম প্রবর্তন করলেন: অসুখের সময় শিষ্য গুরুর, গুরু শিষ্যের, সতীর্থ সতীর্থের সেবা করবে

লাভী শ্রেষ্ঠ সীবলীর স্থবিরের কিছু গুণের কথা এই পোষ্টে দেয়া হয়েছে,এই ওয়েবসাইটি ভিজিট করতে ভুলবেন না

লাভী শ্রেষ্ট সীবলী পূজার উপকারিতা ও উপকরন।

লাভী শ্রেষ্ট সীবলী মহাস্থবির এর পূজা হয়ত সকলে কম বেশি আমরা বিহারে কিংবা বাড়িতে সুন্দর ও সুচারুভাবে করে থাকি। সীবলী পূজা করলে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দূর হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নতি হয়, খাদ্য বস্ত্র অভাব দূর হয়। দারিদ্রের বিত্ত দূর হয়, ধনীর মহাধন লাভ হয়। শত্রুতা থাকলে মিত্রতা লাভ হবে। জলে স্থলে যজ্ঞ দেবতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, সীবলী গুণকথা স্মরণ করলে মুক্ত হওয়া যায়। বৌদ্ধরা আজও বিশ্বাস করেন সীবলী পরিত্রাণ সূত্রপাঠ ও পূজা করলে কেউ অভাবী হন না। তাই বৌদ্ধরা ঘরে ঘরে সীবলী পরিত্রাণ সূত্র পাঠ ও সীবলী পূজা করেন। এ সীবলী ব্রতকথা নামক পুঁথি বা কাহিনী পড়তে হয়। এতে সুখ লাভ, দুঃখ দুর্দশা কিংবা বিপদ হতে মুক্তি লাভে মানুষ মানত স্বরূপ এ পূজা করে থাকেন । বৌদ্ধশাস্ত্র ত্রিপিটকে থেরগাথা গ্রন্থে এবং অন্যান্য পুস্তকে সীবলীর জীবন কাহিনি ও সীবলী পরিত্রাণ সূত্র আছে। সীবলী পূজার নানা উপকরণ হল মধু, ঘি, নারিকেল, চিড়া, আপেল, কমলা, মুড়ি, কলা, বিস্কুট, পেপে, আখ, মঙ্গলঘট, ছবি (বুদ্ধ ও সীবলী), ফুল, পান, সুপারি, মোম, ধূপ ও অন্যান্য উপকরণ। সীবলী পূজা করার সময় এক সাথে বুদ্ধ পূজাও করা হয়। পূজার সময় সীবলী ও বুদ্ধের ২টি ছবি সম্মুখ ভাগে রাখতে হয়। এতে মঙ্গল সাদিত হয়

সকলের জয়মঙ্গল হোক। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।

Saturday, 22 June 2019

মহাকারুনিক ভগবান বুদ্ধ পবেয্যকবাসী ৩০ জন ভিক্ষুকে উপলক্ষ করিয়া দান শ্রেষ্ট কঠিন চীবর দানের প্রর্বতন করিয়াছিলেন। ভগবান বুদ্ধ এক সময়  পঞ্চশত ষড়াভিঙ্ঘ অরহত ভিক্ষু সহ আকাশ পথে যাইয়া হিমালয়ের অনোবতপ্ত নামক মহাসরোবরে উপস্থিত হইলেন। দ্বিপদোত্তম অনুত্তর ধর্মরাজ তথাগত বুদ্ধ সহস্রদল পদ্মে উপবেশনে করিলেন এবং পঞ্চশত ভিক্ষু সংঘ তারাগনের ন্যায় বুদ্ধকে পরিবেষ্টন করিয়া শতদল পদ্মে উপবেশন করিলেন।এইরুপে অরহত শিষ্য পরিবৃত শাক্য পুত্রগন সূর্য্যের ন্যায় বিরোচিত হইতে লাগিলেন। এই অরহত ভিক্ষু সংঘকে সম্বোধন করিয়া শতপূণ্য লক্ষন তথাগত বুদ্ধ বলিলেন হে ভিক্ষু সংঘ তোমরা এই খানেই উপবিষ্ট হইয়া কটিন চীবর দানের মহাত্ন্য শ্রবণ কর।সেই শুভ মহুর্ত্তে বুদ্ধ কর্ত্তৃক আদিষ্ট হইয়া অরহত নার্গিত স্থবির বলিতে আরম্ভ করিলেন
১/ তিনি অনোবতপ্ত মহাসরোবরে স্বীয় কর্মফল ( এইরুপ প্রকাশ করিয়া ছিলেন আমি যখন বন্ধুমতি নগরে দানপতি ছিলাম,তখন।
২/নানাপ্রত্যয় দায়ক হইয়া ভিক্ষু সংঘকে যথাভিরুচি আচ্ছাদন, শয্যা.অন্ন,পানীয় ও যাগু প্রভূতি দ্বারা স্বহস্তে পূজা করিতাম।
৩/চতুদ্দর্শী, পঞ্চদর্শী ও প্রতিহায্য পক্ষে অষ্টাঙ্গিক উপোসথ পালন করিতাম।
৪/যাবজ্জীবন সেই ভিক্ষু ও বুদ্ধের শ্রাবক ছিলাম এবং তাহাদের প্রতি প্রসন্ন চিত্ত, সুমন ও পরিচর্য্যাকারী ছিলাম।
৫/আমি বর্ষাব্রতোল্তিত ভিক্ষু দিগকে কঠিন চীবর দান দিয়াছিলাম।প্রবারিত ভিক্ষুসংঘ আমার সেই দান গ্রহন করিলে।
৬/আমি করজোড়ে প্রদক্ষিন করিয়া কায় মন বাক্য ভিক্ষু সংঘের নির্কট ক্ষমা প্রার্থনা করিছিলাম।
৭/উত্তম গুন শ্রেষ্ট সংঘ মধ্যে কঠিন চীবর দান দিয়ে এই কল্প হইতে বিগত ত্রিশ কল্প পর্যন্ত দর্গতি অনুভব করি নাই।
৮/আটার কল্প দেবলোকে সুখ ভোগ করিয়াছি, চৌত্রিশবার দেবেন্দ্র হইয়া দেবকুলে রাজত্ব করিয়াছি।
৯/দেবরাজ্যের শ্রীধর সহস্রবার ব্রক্ষা হইয়াছি।মনুষ্য কুলে জম্ম পরিগ্রহ করিলে ধনঢ্য কুলেই উৎপন্ন হইতাম।
১০/মধ্যে মধ্যে চক্রবর্তী সুখ ও লাভ করিয়াছি।গননাতীত বিপুল প্রদেশ রাজ্যও ছিলাম
১১/ভোগ সম্পত্তিতে আমার উনতা হয় নাই।ইহা কঠিন চীবর দানের ফল।যেখানে যেখানে উংপন্ন ইহতাম  তথায় সর্ববিধ সম্পদ লাভ করিয়া পরিষদের উত্তম হইতাম।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১২/সুরম্য দেবলোক ত্যাগ করিয়া মানবকুলে উৎপন্ন হইলেও  মানুষ্যদের মধ্যে উত্তম হইতাম।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৩/আমি সেই কুশল কর্ম দ্বারাই দেব নর লোকে সকলেরই প্রিয় পাত্র হইয়াছিলাম। সেইরুপ  ভন্দ্র কর্মের ফলে এখন আমি অচলপদ (অরহত্ত্ব)প্রাপ্ত হইয়াছি।
১৪/অহো আমার দ্বারা সুন্দর কর্মই কৃত হইয়াছিল।তখন আমি সেই দান দিয়াছি,তৎপ্রভাবে দুর্গতি কি তাহা জানি নাই।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৫/আমি শুধু দেবও মনুষ্য এই দুই ভবেই উৎপন্ন হইয়াছি।অন্যগতি জানি না।ইহাও কঠিন চীবর দারের ফল।
১৬/ক্ষত্রিয় ও ব্রাক্ষানকুলে জম্ম গ্রহন করিতাম।হীনকুলে জম্ম গ্রহন করি নাই।ইহাও কঠিন চীবর দানের ফল।
১৭/জগতে প্রচলিত যত প্রকারের দান আছে সর্বাপেক্ষা কঠিন চীবর দানই শ্রেষ্ট এই দান দ্বারা অগ্র শ্রেষ্ট সর্ব প্রকার পূণ্যস্থ লাভ হয়।
১৮/ছোট বড় যত প্রকারের দান আছে একখানা কঠিন চীবর দানের ফলের তুলনায় ঐ দান ষোড়শংশের একাংশ ও হয় না
১৯/অকনিষ্ট ব্রক্ষালোক পরিমান উচ্চ রৌপ্যময় পর্বত দান করিলে ও একখানি কঠিন চীবর দানের তুলনায় ঐ রোপ্য পর্বত দানের পূণ্য ষোলভাগের একভাগ পরিমান হয় না।
২০/ভিক্ষু সংঘের যাবতীয় ব্যবহার্য্য বস্ত সবর্দা সংঘকে প্রদান করিলে ও একখানা  কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ পূণ্য হয় না
২১/সুমেরু পর্বত প্রমান রাশি করিয়া সংঘ মধ্যে ত্রিচীবর দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ ও হয় না।
২২/চুরাশি হাজার বিহার নির্মান করাইয়া দান করিলেও একটি ধাতু মন্দির দান পূণ্যের ষোড়শাংশের একাংশ পূণ্যেও হয় না।
২৩/অকনিষ্ট ব্রক্ষলোক পরিমান উচ্চ সুর্বণ নির্মিত ধাতু মন্দির নির্মান করাইয়া দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দান পূণ্যের ষোলভাগের একভাগ পূণ্যে ও হয় না।
২৪/হস্তী অশ্ব অশ্বতরী,রথও মনিমুত্তা বিভূষিতা কণ্যা,অযুত অযুত পরিমান দান করিলেও একখানা কঠিন চীবর দানের পূণ্যের ষোলভাগের একভাগে ও পূণ্যের ও হয় না।
২৫/ভিক্ষুদের পঞ্চ ফল যুক্ত ও পঞ্চ দোষ বিবর্জিত  অথ্যাৎ সংঘের দোষ হননকারী বলিয়াই কঠিন চীবর দান অতি উত্তম।
২৬/আমি সেই কুশল কর্ম চেতনা ও প্রার্থনা দ্বারা মনুষ্য দেহ পরিত্যাগ করিয়া তাবতিংশ দেবলোকে দিব্য সুখ ভোগ করিয়া ছিলাম।
২৭/আমরা সুকৃত কর্মের ফলে তথায় সুর্বন বর্ণ প্রভাবস্বর বিমান পাইয়া ছিলাম। সেই শত যোজন দীর্ঘ ত্রিশযোজন প্রস্থ ও ষাট যোজন উচ্চ স্বগীয় প্রসাদে উৎপন্ন হইয়াছিলাম।
২৮/সেই শুভ বিমান সূর্য্য বর্ণ রুচিকর প্রভাস্বর ও কাঞ্চন জালাচ্ছন্নছিল। আমরা শরীর সূর্য্যের অনুপাম ষড়রশ্শির ন্যায় আকাশে শুভা পাইত।
২৯/আমরা দেবভবন সর্বদা নৃত্যগীত, সমাকুল ও কির্ণছিল।আমরা শয্যার চারদিকে ষাটি হাজার নানাবিধ দিব্য বাদ্যের মধুর ধবনি আমাকে নিন্দ্রা হইতে জাগ্রত করিত।
৩০/হস্থীযান অশ্বযান শিবিকা সংন্দন সমস্তই লাভ করিয়াছিলাম ইহাও আমার কঠিন চীবর দানের ফল।
৩১/বৃক্ষাগ্রে পর্বতাগ্রে আকাশে ভূমিতে সেখানে যখন আমি বস্ত্র ইচ্ছা করিতাম সকল সময়েই আমি তাহা লাভ করিয়াছিলাম।
৩২/আমি ইচ্ছা করিলে সমাগ্র পৃথিবী বস্ত্রে আচ্ছাদন করিতে পারিতাম ইহাও আমার কঠিন চীবর দানের ফল।
৩৩/বুদ্ধ পচ্ছেকা বুদ্ধ ও শ্রাবক দিগকে কঠিন চীবর দান দিলে সেই দান ফল শ্রেষ্ট বলিয়া সম্বুদ্ধগন কর্ত্তৃক বর্নিত হয়েছে।
৩৪/যেহেতু শিক্ষাকামী ভিক্ষুদের আপত্তি (পাপ) নাশ করে বলিয়াই সব দানের মধ্যে কঠিন চীবর দানই শ্রেষ্ট বলিয়া কথিত হইয়াছে।
৩৫/সেই বুদ্ধ পচ্ছেক বুদ্ধ ও শ্রাবকগন এই শ্রেষ্ট দান দ্বারাই উত্তম অরহত্ত্ব ফল লাভ করিয়াছেন।
৩৬/তদ্বেতুই পন্ডিডগন স্বীয় কল্যাণ কামনা করিয়া সংঘকে অন্তত অল্প দান করিয়াও মনুষ্য দেব ও নির্ববান সুখ করেন।
লেখক: প্রজ্ঞাপ্রিয় স্থবির, উপাধ্যক্ষ  চকরিয়া মানিকপুর বিজয়ানন্দ বৌদ্ধ বিহার

বুদ্ধের অচিন্তনীয় গুণের কথাগুলো এই পোষ্টাতে বলা হয়েছেন, আপনি এবং আপনার কিছু সময় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং এই ওয়েবসাইটি কে ভিজিট করতে ভুলবেন না

®#বদ্ধ_বলেছেন_অতীত_ও_ভবিষ্যৎ_চিন্তনীয়_নয় ?
-------- সংগ্রহ করছি
বুদ্ধ বলেছেন, পালিঃ-
অতীতং মানুসোচন্তি, নাপ্পাটিকাংখে অনাগতাং,
পচ্চুপ্পন্নে চ যে ধম্মে, তত্থ তত্থ বিপস্সতি।
অনুবাদঃ-
বুদ্ধ বলেছেন, অতীতে ও ভবিষ্যৎ মানুষের চিন্তনিয় নয়, বর্তমানকে ভাব। অতীতে আমি মহাপাপ করেছি, এসব নিয়ে মাথা ঘামাবার প্রয়োজন নেই, হতাশ হবারও কারণ নেই। ভবিষ্যতে কি হব, কেমনে মরব, মরে কোথায় যাব, যাব কি যাব না, হব কি হব না-ইত্যাদি চিন্তামনে স্হান দেয়া উচিত নয়। বর্তমানে আমি কি করছি,,এটিই আমার ভাবনার একমাত্র বিষয়। তাহলে আমি কি কোন সৎকর্ম করার কথা চিন্তা করছি? খুব ভাল কথা, দান-শীল-ভাবনায় রত হই না কেন? দান বড় পুণ্যময় কাজ, বার বার করলে জন্মে জন্মে ভোগ সম্পত্তির অধিকারী  হওয়া যায়। দানের প্রভাবে ভোগ্যবস্তুর অভাব কোনদিন ভোগ করতে হবে না। শীল সে তো সদাচার, চরিত্র গঠনের হাতিয়ার। সৎ চরিত্রবান ও সৎ জীবনের  অধিকারী হতে চাইলে শীল-পালন ও শীলের অনুশীলন একান্ত অপরিহার্য। তবে এই দুই কুশল  কর্মের গতি সুগতি ভূমি পর্যন্ত অর্থাৎ মনুষ্যলোকে ও ছয় দেবলোক পর্যন্ত। পুণ্যক্ষয়ে এসব স্হান থেকে চলে যেতে হবে দূরে, বহুদূরে হঠাৎ ছিটকে পড়ে কোন্ অতলে তলিয়ে যাবে এর কোন ইয়ত্তা নেই। সেজন্য এ দু'টোর সুখ-ভোগ কি আদৌ সভার কাম্য?
এবার ভাবনা। কোন বিষয় একাগ্রমনে পুনঃ পুনঃ স্মরণ করাই হল ভাবনা। ভাবনা প্রধানতঃ দুই প্রকার- শমথ ও বিদর্শন। শমথ ভাবনা আবার চল্লিশ প্রকার। চিত্তের ক্লেশ অর্থাৎ লোভ-দ্বেষ-মোহকে  সংযত করে যে সাধনা সেই চিত্ত শান্তকর ধ্যান-সাধনাকে বলা হয় শমথ ভাবনা।
চিত্তের ক্লেশসমূহকে সমূলে বিনাশ করে প্রজ্ঞা উৎপাদন করার নামই বিদর্শন ভাবনা। অবিরত স্মৃতি রাখার নাধ্যমে এ বিদর্শন ভাবনা করতে হয়। বিদর্শন ভাবনার প্রধান উদ্দেশ্য সত্যকে জানা, সম্যকরূপে জানা এবং নিজেকে শীল-সমাধি-প্রজ্ঞা ও বিমুক্তির সাধনায় সুপ্রতিষ্ঠিত করা।
শীলের আলোচনা পূর্বেই করেছি। সমাধি হল চিত্তের স্হৈর্য বা একাগ্র অবস্হা, যার মাধ্যমে প্রজ্ঞালোকে পদার্পণ করা যায়। প্রজ্ঞা হল বিষয়ের যথাভূত দর্শন জ্ঞান। প্রজ্ঞা অবিদ্যার অন্ধকার বিনাশ করে বিদ্যালোক উৎপন্ন করে। প্রজ্ঞা পঞ্চস্কন্ধের অনিত্য-দুঃখ-অনাত্মভাব প্রকটিত করে এবং পারমার্থিক ভাবে দুঃখ আর্যসত্য বা চতুরার্য সত্যকে মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। বিমুক্তি হল অবিদ্যা তৃষ্ণার মূলোৎপাটন এবং নির্বাণরূপ পরম শান্তিলোকে অবতরণ.......

        বৌদ্ধোচিত কর্মের দ্বারাই মানুষ বৌদ্ধ হয়.....
®#বুদ্ধ_বলেছেন_কর্মই_মানুষের_ভেদাভেদ_সৃষ্টিকারী

#রাজা প্রসেনজিতের অন্যতম পুরোহিত ব্রাহ্মণ তোদেয়,বিপুল ধন সম্পদের অধিকারী হয়েও কৃপণ স্বভাবের ছিলেন। মহাপ্লাবন যেমন ঘুমন্ত লোককে হঠাৎ ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি মোহাচ্ছন্ন ও মত্ত তোদেয়কে মৃত্যু একদিন ছিনিয় নিয়ে গেল। তাঁর সুদর্শন তরুন পুত্র 'শুভ' উত্তরাধিকার সুত্রে ঐ সম্পদের মালিক হলেও পিতার কৃপণতা পায়নি। সে একটি কুকুর পুষল। এর প্রতি তার আদর যত্নের সীমা ছিল না। একদিন বুদ্ধ একাকী ভিক্ষাপাত্র হস্তে গৃহপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করলে কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করে বুদ্ধের দিকে ছুটে গেল। তিনি শান্ত স্নিগ্ধ দৃষ্টিতে কুকুরের পানে চেয়ে বল্লেন- তোদেয়, তুমি যখন এ গৃহের অধিপতি ছিলে, তখন সারাজীবন লোক তাড়িয়েছ, আজও কুকুর হয়ে আমায় তাড়াচ্ছ, তোমার স্হান কোথায়? কুকুর বুদ্ধের শান্ত-স্নিগ্ধ চাহনি সহ্য করতে না পেরে নত মস্তকে উনুনের ধারে গিয়ে শুয়ে পড়ল। বুদ্ধ বেড়িয়ে গেলেন। 'শুভ' বাড়ীতে ছিল না, ফিরে এসে সবকিছু শুনে রেগে জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারল এর সত্যাসত্য। বুদ্ধ তাকে আরো বল্লেন কুকুরকে তোয়াজ করলে তোমার পিতার গুপ্তধনের খোঁজও মিলবে। তখন জানতে পারবে এ তোমার পিতা কি-না। বুদ্ধের নির্দেশ মত সে কুকুরকে খুবই তোয়াজ করতে লাগল। অতঃপর কুকুর প্রীত হয়ে গুপ্ত সম্পদের সেখানে গিয়ে মাটী আঁচড়াতে লাগল। মাটী খুঁড়ে সম্পদ পেয়ে তার বিস্ময়ের সীমা রইল না। বুদ্ধের প্রতি তার ক্রোধ ভক্তিতে রূপান্তরিত হল। সে থেকে কর্মের বিচিত্র গতি তার মনকে তোরপাড় করতে লাগল। শুভ অনেক ভেবে-চিন্তে একদিন জেতবনে গিয়ে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করল- ভবৎ গৌতম, মানুষের মধ্যে এত ভেদাভেদ কেন? বুদ্ধ বললেন, হে 'শুভ, প্রাণীগণ কর্মসর্বস্ব, কর্মের উত্তরাধিকারী, কর্মানুসারী, কর্ম তাদের বন্ধু, কর্ম তাদের শরণ, কারণ কর্মই তাদের ভেদাভেদ সৃষ্টিকারী। কর্ম এভাবে অল্পায়ু-দীর্ঘায়ু, রুগ্ন-নীরোগ, দুর্বল-সবল, ক্ষমতাহীন-ক্ষমতাবান, বিশ্রী-সুশ্রী, ধনী-দরিদ্র, কুলীন-অকুলীন, জ্ঞানী-অজ্ঞানী, ইত্যাদি হবার কারণ জীবের স্ব-স্ব কর্মফল। কর্মই তাদের বিভক্ত করে অধমে উত্তমে। তরুণ 'শুভ' কর্মচক্রে জীবের আবর্তনের জটিল রহস্যের বিচিত্র বর্ণনা শুণে মুগ্ধ হয়ে বলল- ভদন্ত আপনি আমার চোখ খুলে দিয়েছেন, আমি আপনার শরণাগত হলাম এবং আপনার প্রবর্তিত ধর্ম ও সঙ্ঘের শরণ নিলাম......

Wednesday, 19 June 2019

অরহতের কিছু ছবি এবং জীবনী পোষ্ট করলাম সবাই বলছি একটু মনযোগ দিয়ে পড়ার আহবান রইল

অদৃশ্য জগতের মহাপূরুষ বার্মার ছেয়াড উ কোবিদ, ছেয়াড উ পন্ডিচ্চ, বোদ উ টোঙ। উনাদের সম্পর্কে বিভিন্ন গল্প শুনে দর্শনের খুব আকাঙ্খা ছিল। ১৯৯৮ সালের জুন মাসে, মাগোয়ে ডিবিশনের মেমভু শহরের অদূরে বৌদ্ধ বিশাল পল্লী, সেখানে মাটির নিজ থেকে সরকার তৈল উত্তোলন করেন। সেই গ্রামের মধ্যখানে বিশার জায়গায় বৌদ্ধবিহার, অনেক বুদ্ধধাতু চৈত্য ও সংঘারাম আছে। সন্ধ্যায় গিয়ে পৌছি, লোকজনের কোন সাড়াশব্দ নেই। কোন প্রকারে ধর্মশালার দোতলায় উপরে উঠে দেখি কয়েকশ মানুষ বসে আছে কোন সাড়াশব্দ নেই। কোন প্রকারে বুদ্ধের বেদীর কাছে গিয়ে বন্দনা করে মৈত্রী ভাবনা করছিলাম। এর মধ্যে শুনা গেল একটু শব্দ উপর থেকে কিছু জিনিষ নিছে পড়ার মত। বুঝতে পাড়ছিলাম উনারা নিশ্চয় আসছেন। উনারা আসার পূর্বে থেকে কিছু জিনিষ দিয়ে থাকেন, ঐগুলো পাওয়ার জন্য হাতাহাতি করার সুযোগ নেই। কারন যাকে দেওয়ার তিনিই পেয়ে থাকেন। সেই সুবাদে আমিও একটা নারিকেল পেয়েছিলাম। ঐগুলি হচ্ছে সব ঔষধ, বিশেষ করে বিভিন্ন রোগা গ্রস্হগণ আর উনাদের সিদ্ধি লাভের জন্য দর্শনে গিয়ে থাকেন। সব সময় কিন্তু আসেন না। একটু পর ভন্তেদের সেবক গৃহী বিদ্যাধর তিনি বের হয়ে আসেন ভিতরের রুম থেকে, বাস্তবে ঐ রুমে তিনি ঋদ্ধিবলে এসেছেন। উনার হাতে বেশ কিছু জিনিষ বিভিন্ন জনকে দিচ্ছিলেন, তিনি বারে বারে জিনিষের জন্য রুমে ঢুকছিলেন, কিন্তু হটাৎ করে ভিন্ন স্হানে আগমন হচ্ছেন ঋিদ্ধির মাধ্যমে যা সচোখে দর্শন করলাম।
কিছুক্খন পর হটাৎ করে ছেয়াড উ পন্ডিচ্চ রুম থেকে বের হয়ে এসে উনার নিদ্ধারিত স্হানে বসলেন। উনার চেয়ারে র পার্শে ছিলাম বিদায় পা স্পর্শ করে বন্দনা করার সুযোগ হয়েছিল। দান ও করেছিলাম মনের মত করে। শ্রদ্ধেয় ভন্তে অল্পক্খন করে অাবার রুমে ঢুকে গেলেন। এবং সেখান থেকে নাম ধরে বিভিন্ন নাম ধরে লোকে ডেকে ঔষধ ও উপদেশ দেন।
বিশেষত:
১/ উনারা মানুষের সাথে মিশার মত যতদিন সময় ছিল সেই শত শত বছরের অধিক পূর্বে সেই বিহারের বিহার অধ্যক্খ এবং জন্মজাত সন্তান ছিলেন। যখন সময় হয় একদিন উদাও হয়ে চলে গেছেন সাধারণ মানুষের অন্তরালে।
২/ ভক্তদের দানিয় সামগ্রী সেই রুমে সব ঢুকালেন, কিন্তু ফিরে যাওয়ার সময় সবকিছু নিয়ে গেছেন, নিজে ঢুকে দেখলাম ভিতরে কোন জিনিষ নাই।
৩/ উনারা সাধারন মানুষের মত কোন খাদ্য খেতে হয় না।
৪/ উনাদের বাস স্হান কৈলাশ পর্বতের মত স্হানে।
৫/ উনারা বুদ্ধ শাসনের কাজ করছেন, উনাদের দর্শনে অশ্রদ্ধাবান শ্রদ্ধাবান হচ্ছেন। কর্ম ভাল ব্যক্তি উনাদের ঔষধ সেবায় ভাল হচ্ছেন।
এ ধরনের অসংখ্য গুনাবলী সম্পন্ন ব্যক্তি যা সচোখে না দেখলে বিশ্বাস করা খুব কঠিন।

সংরক্ষন: করা হয়েছে









বুদ্ধের সময়ে(মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন)ছয়জন তীর্থঙ্কর(লোকশিক্ষক)
সংরক্ষ:করা হয়েছেন

তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধ বলেছিলেন,আপন মিথ্যাদৃষ্টি ও তদনুরুপ কর্মের ফলে দীর্ঘবিদর্শকভ্রাতা ষাট যোজন পরিমিত বিশাল দেহ লাভ করে চার বুদ্ধান্তর পরিমাণ কাল মহানরকে উত্থান অবস্থায় অপ্রমেয় দুঃখভোগ করছে।সেই মিথ্যাদৃষ্টি সম্পন্ন তাপসের উপদেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে তাঁর সেবক পাঁচশত গৃহস্থ নরকে পতিত হয়ে আজও নরকযন্ত্রণা ভোগ করছে।বুদ্ধের সমসাময়িক কালে পূরণ কশ্যপ প্রভৃতি ছয়জন লোক শিক্ষক বলেছিলেন,আমরা অনুত্তর সম্যক সম্বোদ্ধি লাভ করে সম্যক সম্বুদ্ধ হয়েছি, এই মিথ্যাধারণা পোষণ ও প্রচার করে যেমন নিজের অনিষ্ট করেছেন, তেমনি তাঁদের মতাবলম্বী অনেক অন্ধবিশ্বাসী মূর্খেরও সর্বনাশ করেছেন। ভগবান তথাগত পরাভব সূত্রে বলেছেন----------
অসন্তস্স পিযো হোতি সন্তে না কুরুতে পিযং,
অসতং ধম্মং রোচেতি তং পরাভাবতো মুখং,
বুদ্ধ প্রভৃতি সম্যক জ্ঞানি ও সৎপুরুষদের প্রিয় না হয়ে যারা জ্ঞানহীন অসাধু ব্যক্তিদের প্রিয় হয় এবং তাদের ধর্মকে শ্রদ্ধা করে ও মেনে চলে তাদের পরাভব হয়।ইহ ও পর জীবনে তাদের অধোগতি ও মহাদুঃখ ভোগ করিতে হয়।
নিম্নে ছয়জন তীর্থঙ্কর সম্পর্কে সংক্ষেপে বণর্না করা হলঃ
১. পূরণ কশ্যপ
------------------------
বুদ্ধের সময়ে এক শ্রেষ্টীর একজন কম একশত দাস ছিল।শ্রেষ্ঠী কিছুদিন পর অন্য একজন দাস সংগ্রহ করে দাসের সংখ্যা একশত পরিপূর্ণ করেন।নতুন দাসটির দ্বারা শত পূর্ণ হওয়ায় তার নাম হল পূরন।সৌভাগ্যসূচক শত সংখ্যা পুরণকারী এই দাসকে মঙ্গলদাস ও বলা হত।এই কারণে তার ভালমন্দ সম্বন্ধে কেউ কিছু বলত না। একসময় ভাগ্যবিপর্যয় হতে মুক্তি পবার জন্য এক গভীর রাতে পালিয়ে যায়। পথে চোরেরা তার বস্ত্র কেড়ে নেয়। সে নগ্নাবস্থায়ই লোকালয়ে যেতে বাধ্য হয়। মানুষেরা তাকে তদবস্থায় দেখে ইনি আসক্তিহীন অর্হৎ এ ধারনায় প্রচুর খাদ্যদ্রব্যাদির দ্বারা পূজা করে।নগ্নতাই তার এই পূজা সৎকারের কারণ জেনে কেউ কাপড় দিলেও তিনি ব্যবহার করতেন না।এই নগ্নতাই হল তার প্রব্রজ্যা।তখন হতে তিনি জনসাধারণের মধ্যে বিশিষ্ট সন্নাসীরুপেই পরিচিত হন।পাঁচশত ব্যক্তি তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তিনি কশ্যপ গোত্রীয় ছিলেন বলে পুরণ কশ্যপ নামে পরিচিত হন। পুরণ কশ্যপ বলতেন,কায়ে বা বাক্যে যে কোন প্রকারের পাপ করলে বা করালে পাপ হয় না--এ হচ্ছে তীর্থঙ্কর পুরণ কশ্যপের মতবাদ। তিনি ছিলেন অত্রুিয়াবাদী।

২.মক্ খালি গোসাল
------------------------------------
এক ধনীর পূর্ণগর্ভা দাসী গোশালায় কাজ করতে গিয়ে তথায় একপুত্র সন্তান প্রসব করে। গোশালায় জন্ম হয়েছে বলে সবাই তাকে গোশাল বলেই ডাকত।সে বড় হলে প্রভু তাকে এক তৈলপূর্ণ মৃৎপাত্র অন্য প্রতিবেশীর গৃহে নিয়ে যাবার জন্য আদেশ দেন। কিছুক্ষণ পূর্বে বৃষ্টি হওয়ায় পথ পিচ্ছিল হযেছিল।প্রভু বলেন "তাত'! সাবধানে যাবে মা খলি- স্থালিত হইও না।সাবধানে চলতে চেষ্টা করলেও তার পদস্খলিত হয়ে সে পড়ে যায়।তাতে তার তৈলপত্র ভেঙ্গে গিয়ে সব তৈল নষ্ট হয়ে যায়। প্রভুর তিরস্কার ও শাস্তির ভয়ে পালিয়ে যাবার সময় অন্যেরা তাকে ধরতে গিয়ে তার পরিহিত কাপড় ধরে। সে কাপড় ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।অন্যান্য সব ঘটনা পুরণ কশ্যপ এর মত জ্ঞাতব্য।প্রভুর মা খলি হতে মক্ খলি শব্দের উৎপত্তি। তিনি যখন সমাজে লোক শিক্ষক রুপে প্রসিদ্ধ হন, তখন মক্খালি গোসাল নামে পরিচিত হন।,,,,,,তার উক্তি ছিল এই,প্রাণীদের শুদ্ধি বা অশুদ্ধির কোন হেতু বা প্রত্যয় নেই।অহেতু অপ্রত্যয়ের প্রাণীরা শুদ্ধও অশুদ্ধ হয়"--এই হচ্ছে তীর্থঙ্কর মক্ খালি গোশালের মতবাদ।তিনি ছিলেন অহেতুবাদী'।

৩. নিগ্রন্থ নাথপুত্র
-----------------------------
মহাবীর বৈশালির এক বিশিষ্ট সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। যৌবনে তিনি সন্ন্যাস নিয়ে জনসংঘকে আপন কল্পিত শাস্ত্র শিক্ষা দিতেন।তিনি প্রচার করতেন স্ত্রী- পুত্র, ক্ষেত্রবস্ত প্রভৃতি সংসারের কিছুরই প্রতি তাঁর আসক্তিরুপ ক্লেশগ্রন্থ নেই। সেজন্য তিনি লোক সমাজে নির্গ্রন্থ এবং নাথের পুত্র বলে নির্গ্রন্থ নাথ পুত্র নামে পরিচিত ছিলেন।তার বহু শিষ্য ও গৃহস্ত ভক্ত ছিলেন।তিনি ছিলেন চতুর্যাম---সংযমবাদী।

৪. বেলট্ঠীপুত্র সঞ্জয়
-----------------------------------------
তেমন আর একজন লোকশিক্ষকের নাম ছিল সঞ্জয়। তাঁর পিতার নাম ছিল বেলট্ঠী। তাই তিনি বেলট্ঠী পুত্র সঞ্জয় নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁরও অনেক সন্ন্যাসী শিষ্য ও গৃহী ভক্ত ছিলেন।তিনি ছিলেন বিক্ষেপবাদী বা অমর বিক্ষেপী।

৫.পকুধ কাত্যায়ন
---------------------------------
পকুধ নামক আর একজন লোকশিক্ষক কাত্যায়ন গোত্রে উৎপন্ন বলে সর্বসাধারণের নিকট পকুধ কাত্যায়ন নামে পরিচিত।তারও অনেক সন্নাসী শিষ্য ও গৃহী ভক্ত ছিল। তিনি ছিলেন শীতল জল ত্যাগী। পান,স্নান এবং শৌচাদি সব ব্যাপারে তিনি গরম জল বা কাজিঁ ব্যবহার করতেন।এই বিচিত্র-- সন্ন্যাসীর ধর্মবিশ্বাস ছিল বিচিত্রতর।নদী বা কোন জলাভুমি অতিক্রম করতে হলে শীলভঙ্গের ভয়ে তিনি বালুকা বা ধূলির স্তূপ নির্মাণ করে অধিষ্ঠান করে সে- স্তূপে আপন শীলরাশি রেখে যেতেন।তিনিও ছিলেন অক্রিয়াবাদী।

৬. অজিত কেশকম্বলী
------------------------------------
বুদ্ধের সমকালীন অজিত নামে আর একজন লোকশিক্ষক ছিলেন।তিনি নিত্য মনুষ্য- কেশ- নির্মিত কম্বল ব্যবহার করতেন বলে তিনি অজিত কেশকম্বলী নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন।তার ও বহু সন্ন্যাসী এবং গৃহী শিষ্য ছিল। তার উক্তি ছিল এই, দানের এবং মাতাপিতাদি গুরুজনের সেবাদিতে কোন ফল নেই, মৃত্যুর সঙ্গেই প্রাণীদের উচ্ছেদ হয় বিনাশ হয়,পুনর্জন্ম হয় না"- এ হচ্ছে তীর্থঙ্কর অজিত কেশকম্বরের মতবাদ। তিনি ছিলেন নাস্তিক বা উচ্ছেদবাদী।
এই ছয়জন লোকশিক্ষক মিথ্যাদৃষ্টি পরায়ণ হওয়ায় মৃত্যুর পর তারা এবং তাদের শিষ্য ও গৃহী ভক্তরা মহা নরকে উৎপন্ন হয়ে অপরিনাম দুঃখ ভোগ করতেছে। বালগন ( মুর্খগণ) নিজের এবং অনুগামীদের যেমন সর্ব উন্নতি ও সুখ বিনাশ করে সর্বপ্রকারে মহাদুঃখের কারণ হয়,তেমন পন্ডিত সৎপুরুষগণ নিজের এবং অনুগামীদের সকল প্রকার দুঃখ ও অশান্তি বিনাশ করে সর্ববিধ সুখ শান্তি বর্ধন করে থাকেন। তাই আমাদের ও সকলের উচিত গুরুবাদে পক্ষপাদ দুষে দুষ্ট না হয়ে তথাগত বুদ্ধের নির্ধেশিত পথে নিজের জীবনকে পরিচালিত করে সম্যক পথে অগ্রসর হয়ে দুর্লভ মানব জীবনকে সার্থক করা।🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
(নিজে পড়ুন শেয়ার করে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন)

Monday, 17 June 2019

*কৃশা গৌতমী*
:::::::::::::::::::::::::
বুদ্ধের সময়ে কৃশা গৌতমী শ্রাবস্তী নগরের এক গরিবের ঘরে জন্মগ্রহন করেন।তাঁর নাম ছিল গৌতমী।তাঁর দেহ অত্যন্ত কৃশ হওয়ায় তিনি কৃশা গৌতমী নামে অভিহিত হন। তাঁর বিবাহিত জীবনে তিনি সুখ লাভ করতে পারেননি।অনাদর-অবহেলায় কেটেছে তাঁর জীবন। অসময়ে তাঁর স্বামীও মৃত্যু বরন করেন।লোকে তাকে অনাথা বলত।কিন্তু এক পুত্রসন্তান প্রসব করে তিনি সম্মান লাভ করেন। পুত্রটিই ছিল তাঁর একমাত্র আশা -ভরসা। পুত্রটি বড় হয়ে ক্রমে কৈশোরে উত্তীর্ণ হলে হঠাৎ তারও মৃত্যু হয়। পুত্রের মৃত্যুতে তিনি শোকে পাগল হয়ে যান। একমাত্র পুত্রের মৃত্যু তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। সন্তানের মৃতদেহ কোলে নিয়ে পাগলের মতো তিনি মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে লাগলেন। সকলের কাছে মৃত সন্তানকে বাঁচানোর জন্য ঔষধ ভিক্ষা চাইলেন। ঔষধ কেউ দিতে পারলেন না। বরং নগরবাসী কেউ কেউ তাঁকে পাগল বলে ভৎর্সনা করলেন।কৃশা গৌতমী কারো কথাতেই ভ্রুক্ষেপ করলেন না। সন্তাকে বাঁচানোর আশায় তিনি ছুটে চললেন প্রত্যেকের দুয়ারে দুয়ারে। অবশেষে এক মহৎ ব্যক্তি তাঁকে তথাগত বুদ্ধের কাছে গিয়ে ঔষধ প্রার্থনা করতে বললেন।
অতঃপর কৃশা গৌতমী মৃত সন্তান কোলে নিয়ে বুদ্ধের নিকট উপস্থিত হন। উপস্থিত হয়ে তিনি বুদ্ধকে বললেন; ভগবান! আমার সন্তানের জন্য ঔষধ দিন। বুদ্ধ কৃশা গৌতমীর দিকে তাকালেন এবং ধ্যান চেতনায় দেখলেন কৃশা গৌতমীর পূর্বজন্মের অনেক সুকৃতি আছে।কিন্তু এ জন্মের নানাবিধ কর্ম ও কর্মফলে তার হৃদয় কষ্টে ভরপুর।বুদ্ধ তার মানসিক অশান্তি দূর করার জন্য তাঁকে বললেন; নগরে গিয়ে এমন একটি ঘর থেকে সরিষাবীজ নিয়ে এসো, যে ঘরে কখনো মৃত্যু হয়নি।' বুদ্ধের কথা শুনে কৃশা গৌতমী কিছুটা শান্ত হন এবং মৃত পুত্রকে বুকে নিয়ে তিনি নগরে প্রবেশ করেন। তিনি প্রতিটি ঘরের দরজায় গিয়ে সরিষাবীজ ভিক্ষা করে জিজ্ঞেস করলেন, ঐ ঘরে কোনো মৃত্যু ঘটেছে কি না। সকল ঘরে একই উত্তর পেল, এখানে কত মৃত্যু হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। তিনি বুঝতে পারলেন, কোনো ঘরই মৃত্যুর করাল গ্রাস থেকে মুক্ত নয়। জন্ম হলেই মৃত্যু অনিবার্য। সব বস্তু অনিত্য। অতঃপর পুত্রের সৎকার করে তিনি বুদ্ধের নিকট ফিরে যান। বুদ্ধ জিজ্ঞাসা করেন, গৌতমী! সরিষাবীজ পেয়েছ কি? কৃশা গৌতমী বললেন, ভগবান! সরিষাবীজের আর প্রয়োজন নেই। আমাকে দীক্ষা দিন। তখন বুদ্ধ তাকে বললেন, বন্যার স্রোত যেমন গ্রাম, নগর ভাসিয়ে নিয়ে যায়, তেমনি ভোগবিলাসে রত মানুষও মৃত্যুর মাধমে ধ্বংস হয়ে যায়। বুদ্ধের উপদেশ শুনে কৃশা গৌতমী স্রোতাপত্তি ফল লাভ করে ভিক্ষুণীধর্মে দীক্ষা প্রার্থনা করেন। দীক্ষিত হওয়ার পর তিনি খুব ভালোভাবে ভিক্ষুণী জীবনের নিয়ম পালন করেন।সকল প্রকার লোভ, হিংসা,মোহ, তৃষ্ণা ক্ষয় করে তিনি অর্হত্বপ্রাপ্ত হন। বু্দ্ধ তাঁকে অমসৃণ বস্ত্র পরিধানকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা করেন। স্বীয় সাফল্যে উল্লসিত হয়ে তিনি অনেক গাথা ভাষণ করেছিলেন তার কিছু উপদেশ নিচে তুলে ধরা হলো:
১। সাধু ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করা জ্ঞানীগণ প্রশংসা করেন। সাধু ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব করলেন জ্ঞানী হওয়া যায়।
২। সৎ মানুষের অনুসরন করো। এতে জ্ঞান বর্ধিত হয়।
৩।চতুরার্য সত্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করো।
৪। আমি আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি, নির্বাণ উপলদ্ধি করেছি।
৫। আমি বেদনামুক্ত, ভারমুক্ত। আমার চিত্ত সম্পূর্ণ মুক্ত।
সাধু সাধু সাধু

                        সপ্তম অপরিহানীয় ধর্ম
১/যাহারা সভা সমিতিতে সর্বদা একত্রিত হয়
২/সর্বদা একতাবদ্ধভাবে একত্রিত হয়,সভার শেষে সকলে এক সঙ্গেই চলিয়া যায় এবং সভায় প্রভাশিত কাজ একযোগে সম্পাদন করে।
৩/যাহারা দেশে ও সমাজে কুনীতিয় প্রবর্ত্তন করে না,পূর্বের নির্দ্ধায়িত সুনীতির উচ্ছেদ সাধন করে না এবং প্রাচীন সুনীতি যথাযথভাবে মানিয়া চলে
৪/যাহারা বৃদ্ধগনকে সৎকার গৌরব, সম্মান ও পূজা করে এবং তাহাদের বাক্য শ্রবণ ও গ্রহন করা উচিত বলিয়া মনে করে
৫/যাহারা কোন কুল স্ত্রী বা কুল কুমারীদের সতীত্ব নষ্ট করে না, এবং ধরদ্ধাবে নারীদিগকে স্বাধীনতা প্রদান করে।
৬/গ্রাম -মধ্যে ও বর্হিপ্রদেশে যেই সব চৈত্য আছে,যাহারা সেই চৈত্য সমূহের সৎকার গৌরব, সম্মান ও পূজা করে এবং সেই চৈত্য সমূহে পূর্ব প্রচলিত ধর্মত:দান ধর্ম ও পূজার পরিহানী করে না।
৭/যাহারা অরহত ও শীলবান  দিগকে ধর্মত:রক্ষা করে, পালন করে, তাহাদের সুখ সুবিধার সুব্যবস্থা করে এবং দেশে যেই অরহতগন আসেন নাই,তাঁহারা কি প্রকারে দেশে আসিবেন উপস্থিত অরহতগন দেশে নিরাপদে বাস করিতেছেন কিনা,সর্বদা এই সব অনু সন্ধান করে,তাহাদের শ্রী বৃদ্ধিই হইয়া থাকে,পরিহানী হয় না।

এই পোষ্টাকে আপনাদের সবাই কে পড়ার আহবান রইল,আমাদের ওয়েবসাইট কে ভিজিট করতে ভুলবেন না, লাইক, শেয়ার, কমেন্ট করে আমাদের লেখনির মধ্যে ভুল তুরুটি থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি কামনা করছি এবং।

চঁন্দনাইশ থানার অন্তরগত পর্ব জোয়ারা জিনপাল বিদর্শন ভাবনার কেন্দ্রে এর প্রতিষ্টাতা মহাপরিচালক বিদর্শন আর্চায্য আমারই বিদর্শন গুরু পরম শ্রদ্ধেয় ভদন্ত জিনপাল মহাথের এর প্রতিষ্টানের পক্ষে হতে পূষ্পা দিয়ে সাগত জানালেন এবং যিনি সম্প্রতি সময়ে  জাতির জন্য অগ্র ভূমিকা রেখে চলেছেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা থেকে  স্বর্ণপদকে ভূষিত হয়েছেন কক্সবাজার জেলাধীন রামু উপজিলার অন্তরগত উত্তের ফতৈখাঁরকুল ইউনিয়নের ফারিকুল গ্রাম এর বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহারের আজীবন অধ্যক্ষ এবং প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু -শ্রামণ প্রশিক্ষণ সাধনা পরিবেনের প্রতিষ্টাতা মহাপরিচালক আমারই ধর্মপিতা পরম শ্রদ্ধেয়  বিদর্শন আর্চায্য বিনয়শীল ভদন্ত শীলমিত্র স্থবির।

       

Friday, 14 June 2019

যিনি নবীন বয়সে বুদ্ধ শাসনে প্রব্রাজিত হয়ে এবং বুদ্ধ জাতির হিতের জন্য সুখের জন্য কল্যাণের জন্য নিজ প্রচেষ্টায় ধর্মে বুকে লালন করে যাচ্ছে আমার পরম করুণাময়ী ধর্মপিতা কল্যাণকামী, রামু ফারিকুল প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু -শ্রামন প্রশিক্ষণ সাধনা পরিবেনের প্রতিষ্টাতা মহাপরিচালক, রামু ফারিকুল বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহারের আজীবন অধ্যক্ষ, চকরিয়া নিজপানখালী কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ, চকরিয়া সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির সাধারণ সম্পাদক, যিনি অল্প সময়ে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা থেকে, জুন মাসের ১৪/২০১৯ স্বর্ণপদকে ভূষিত হয়েছেন, ভদন্ত: শীলমিত্র স্থবির

সমগ্র বৌদ্ধ সমাজে অবদান রাখায়
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কর্তৃক স্বর্ণপদক লাভ করলেন
বাংলাদেশের থেরবাদ শাসনের কর্ণদ্বার
#প্রজ্ঞামিত্র বৌদ্ধ ভিক্ষু শ্রামণ প্রশিক্ষণ ও সাধনা পরিবেণ,রামু,কক্সবাজার
সনদ পত্র ও স্বর্ণ পদক গ্রহন করছেন
গুরুদেব শ্রদ্ধেয় #শীলমিত্র থের।
এবং রামু ফারিকুল গ্রামের ধর্মপ্রাণ উপাসক।





Tuesday, 11 June 2019

ভিক্ষু কত প্রকার ও কি কি?

ভিক্ষু চার প্রকার - ১। মার্গ জিন ভিক্ষু ২। মার্গ দেশক ভিক্ষু ৩। মার্গ জীবি ভিক্ষু ৪। মার্গ দূষক ভিক্ষু। ১। মার্গ জিন ভিক্ষু কাকে বলে? সম্যক সম্বুদ্ধ ও পচ্চেক বুদ্ধদেরকে মার্গ জিন ভিক্ষু বলে। ২। মার্গ দেশক ভিক্ষু কাকে বলে? যে ভিক্ষু আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ পথে পরিচালিত হয়ে সমথ- বিদর্শণ ভাবনা দ্বারাই লোভ, দ্বেষ, মোহ, মান, মিথ্যা দৃষ্টি, বিচিকিৎসা (সন্দেহ),স্ত্যান-মিদ্ধ,(আলস্য-ঘুম),ঔদ্ধত্য(চঞ্চলতা),অহ্রী(পাপের নির্লজ্জতা),অনপত্রপা ( পাপের প্রতি নিরভয়তা) , এই দশ র্বিধ ক্লেশ চিরতরে ধ্বংশ করেছেন, তাকে মার্গদেশক ভিক্ষু বলে। ৩। মার্গ জীবি ভিক্ষু কাকে বলে? যে ভিক্ষু বুদ্ধের প্রজ্ঞাপিত প্রাতিমোক্ষ শীল, ইন্দ্রিয় সংবরণ শীল, আজীব পরিশুদ্ধ রক্ষা করে আর্য অষ্টাঙ্গিকে মার্গ পথে চলেন, তাকে মার্গ জীবি ভিক্ষু বলে। ৪। মার্গ দূষক ভিক্ষু কাকে বলে? যে ভিক্ষু ভিক্ষুত্ব নষ্ট হয়েও ভিক্ষু বেশ ধরে বুদ্ধের সদ্ধর্ম শাসনে ভিক্ষু সেজে থাকে, অসংযমী, পাপাচারী, পাপ করতে নির্লজ্জ ও নির্ভয় এবং আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ থেকে চ্যুত হয়েছেন, তাকে মার্গ দুষক ভিক্ষু বলে। যারা খাটি শ্রদ্ধাবান দায়ক- দায়িকা এবং ধর্ম বিষয়ে অভিজ্ঞ, তারা কখনো মার্গ দূষক ভিক্ষুদের সাথে মার্গ জিন, মার্গদেশক, মার্গ জীবিকে তুলনা করেনা। এবং মার্গ দূষক ভিক্ষুর দুঃশীলতা দেখে মার্গ জিন, মার্গ দেশক ও মার্গ জীবি ভিক্ষুকে কিংবা ধর্মকে সন্দেহ বা অশ্রদ্ধা করেন না। বর্তমানে অধিকাংশই দায়ক - দায়িকাদের ত্রিপিটক শিক্ষার অভাবে এবং সদ্ধর্ম জ্ঞানের অভাবে অপ্রতুলতার কারণে, মার্গদূষক ভিক্ষুদেরকে দেখে ধর্মকে বা শীলবান ভিক্ষুদেরকেও সন্দেহ পোষণ করছেন/ অশ্রদ্ধা করছেন। গতকাল এক পোষ্টে দেখলাম, অনেক দায়ক- দায়িকা ভিক্ষুদেরকে বা ধর্মকে নিয়ে অসৌজন্য মূলক মন্তব্য করতে কয়েক জনকে মন্তব্য করতে দেখছি। তাদের কোন ভান্তেকেও নাকি শ্রদ্ধা জাগে না আর । বর্তমান ভান্তেদেরকে দেখলে নাকি বিহারে যেতে ইচ্ছে করেনা। যারা ত্রিপিটক শিক্ষা করেনা এবং যাদের সদ্ধর্ম জ্ঞানের অপ্রতুল তারা এই রকম কথা-বার্তা বলে থাকেন। ধর্মের প্রতি আস্থা হারান। তাই, আমার অনুরোধ থাকবে, বুদ্ধের সদ্ধর্ম সম্পর্কে না বুঝে বা কোন ভিক্ষু সম্পর্কে সঠিক ভাবে না জেনে, নাবুঝে কারো কাছ থেকে শুনে আন্দাজে কোন কিছু মন্তব্য বা সমালোচনা করবেন না। যা কারোর জীবনে অমঙ্গল বয়ে আনবেন না। সমগ্র ত্রিপিটক এখন আপনার হাতেই মুঠোই। তাই, ত্রিপিটক পড়ুন। ত্রিপিটক অধ্যায়ন করলে জানতে পারবে, ভিক্ষু কত প্রকার ও কি কি, সদ্ধর্ম কাকে বলে, একজন শ্রদ্ধাবান দায়ক-দায়িকা ধর্ম পরিহানীমূলক কোন কিছু দেখলে তার করণীয় কি, সদ্ধর্ম শাসনে তার দায়িত্ব-কর্তব্য কি? এসব বিষয় জানতে পারবে।। সকলের সত্য ধর্মের জ্ঞান জাগ্রত হউক।

Monday, 10 June 2019

বুদ্ধের জীবনী (Life Of The Buddha)

A Buddhist Monk at Manikpur Buddhist Temple in Bangladesh

Please Subscribe our channel..এই চ্যানেলে বুদ্ধের মূখশ্রিত বানি প্রচার করা হয়।।দয়া করে সাবস্ক্রাইব করবেন, ধন্যবাদ

please like this our page...



উত্তর-পূর্ব ভারতের কপিলাবাস্তু নগরীর রাজা শুদ্ধোধন এর পুত্র ছিলেন সিদ্ধার্থ(গৌতম বুদ্ধ)। খ্রিস্টপূর্ব ৫৬৩ অব্দে এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে লুম্বিনি কাননে (নেপাল) জন্ম নেন সিদ্ধার্থ(গৌতম বুদ্ধ)। তাঁর জন্মের ৭ দিন পর তাঁর মা, রানি মহামায়া মারা যান। তাঁর জন্মের অব্যাবহিতকাল পর জনৈক কপিল নামক সন্ন্যাসী কপিলাবাস্তু নগরীতে আসেন। তিনি সিদ্ধার্থকে দেখে ভবিষ্যৎবানী করেন যে, সিদ্ধার্থ ভবিষ্যতে হয় চারদিকজয়ী রাজা হবেন, নয়ত একজন মহান মানব হবেন। মা মারা যাবার পর সৎ মা মহাপ্রজাপতি গৌতমী তাকে লালন পালন করেন, তাই তার অপর নাম গৌতম। ছোটোবেলা থেকেই সিদ্ধার্থ সব বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন। কিন্তু সিদ্ধার্থ সংসারের প্রতি উদাসীন ছিলেন বলে তাঁকে সংসারী করানোর লক্ষ্যে ১৬ বছর বয়সে রাজা শুদ্ধোধন যশোধরা মতান্তরে যশোধা বা গোপা দেবী নামক এক সুন্দরী রাজকন্যার সাথে তার বিয়ে দেন। রাহুল নামে তাদের একটি ছেলে হয়। ছেলের সুখের জন্য রাজা শুদ্ধোধন চার ঋতুর জন্য চারটি প্রাসাদ তৈরি করে দেন। কিন্তু উচুঁ দেয়ালের বাইরের জীবন কেমন তা জানতে তিনি খুবই ইচ্ছুক ছিলেন। একদিন রথে চড়ে নগরী ঘোরার অনুমতি দেন তার পিতা। নগরীর সকল অংশে আনন্দ করার নির্দেশ দেন তিনি, কিন্তু সিদ্ধার্থের মন ভরল না। প্রথম দিন নগরী ঘুরতে গিয়ে একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি, দ্বিতীয় দিন একজন অসুস্থ মানুষ, তৃতীয় দিন একজন মৃত ব্যক্তি এবং চতুর্থ দিন একজন সন্ন্যাসী দেখে তিনি সারথি ছন্দককে প্রশ্ন করে জানতে পারেন জগত দুঃখময়। তিনি বুঝতে পারেন সংসারের মায়া, রাজ্য, ধন-সম্পদ কিছুই স্থায়ী নয়। তাই দুঃখের কারণ খুঁজতে গিয়ে ২৯ বছর বয়সে গৃহ্ত্যাগ করেন। দীর্ঘ ৬ বছর কঠোর সাধনার পর তিনি বুদ্ধগয়া নামক স্থানে একটি বোধিবৃক্ষের নিচে বোধিজ্ঞান লাভ করেন। সবার আগে বুদ্ধ তাঁর ধর্ম প্রচার করেন পঞ্চ বর্গীয় শিষ্যের কাছে; তাঁরা হলেন কৌন্ডিন্য, বপ্প, ভদ্দিয়, মহানাম এবং অশ্বজিত। এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছর বুদ্ধ ভারতের বিভিন্ন স্থানে তার বৌদ্ধ ধর্মের বানী প্রচার করেন। এবং তাঁর প্রচারিত বানী ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে ও দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৩ অব্দে তিনি কুশীনগর নামক স্থানে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যু বরন করেন। গৌতম বুদ্ধের প্রচারিত বানীর মূল অর্থ হল অহিংসা।